নলছিটি
ইউপি সদস্যকে লাঞ্চিত করে পরিষদ থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক // রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ২ নং মগড় ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মিন্টু খানকে মারধর করে পরিষদ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে হেরে যাওয়া প্রার্থী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সাইয়্যিদের নেতৃত্বে গত ১৭ ডিসেম্বর সকালে বিএনপি নেতাকর্মীরা পরিকল্পিত ভাবে হামলার এ ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগে বলা হয়।
পরিষদে লাঞ্চিত হওয়া ইউপি সদস্য মিন্টু খানের ভাই শাহীন খান অভিযোগ করে বলেন,তার ভাই ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে গণভোটে ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচিত হয়ে জন কল্যাণে কাজ করে আসছে। ওই নির্বাচনে জন সমর্থন না থাকা সাইয়্যিদ হাওলাদার পরাজিত হয়। এতে তিনি নির্বাচিত সদস্যকে হেয় প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়। ওই নির্বাচনে অন্যান্য ওয়ার্ডে যারা পরাজিত হয়েছে তাদের সাথে জোট বাঁধে। এরই ধারাবাহিকতায় মিন্টুকে এক মহিলার মাধ্যমে ফোন করিয়ে ওয়ারিশ সার্টিফিকেটে স্বাক্ষর লাগবে বলে অজুহাত দেখিয়ে পরিষদের কার্যালয়ে আসতে বলে। মিন্টু ফোন পেয়ে পরিষদে গিয়ে প্রচুর লোকের সমাগম দেখতে পায়। তিনি ভিড় ঠেলে পরিষদে ঢুকে ওয়ারিস সার্টিফিকেটের কথা জানতে চাইলে সাইয়্যিদ,বাবু মল্লিক, চান আহমেদ মাস্টার তার উপর এলোপাতাড়ি চর থাপ্পড় দেয়। প্যানেল চেয়ারম্যান সহ অন্যান্যদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে।
গালাগাল করতে করতে মিন্টুর কলার ধরে টানতে টানতে পরিষদ থেকে বের করে দেয়। একইসাথে আর কোনদিন পরিষদের কোন সদস্য ও দায়িত্বরতদের পরিষদে আসতে নিষেধ করে। পরিষদে আসলে খুন জখমের হুমকি দেয়া হয়। এ আতংকে প্যানেল চেয়ারম্যান সহ দায়িত্বরত কোনো ইউপি সদস্য পরিষদে আসতে পারছেনা। ঘটনার বিষয়ে স্বীকার করে সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য চম্পা আকতার বলেন, তিনি ঘটনার সময় পরিষদের গেইটে দাড়ানো ছিলেন।ইউপি সদস্য মিন্টুকে কলার ধরে কতিপয় লোক টানা হেচড়া করে বাইরে নিয়ে যায়। গালাগাল দিয়ে আর কখনো পরিষদে যে কেউ না আসে সে ব্যাপারে হুশিয়ারি করে। এব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান জামাল মল্লিক বলেন, ঘটনাটি মনে হয় পরিকল্পিত।১৬ ডিসেম্বর পরিষদে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি,আলোকসজ্জা করি। আমাকে রাতেই আমার এক পরিচিত আস্থাশীল লোক অপরিচিত লোক ফোন দিয়ে পরিষদে আসতে নিষেধ করে।
গত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পরিষদে মিন্টু খানের উপর হামলা চালায় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে আমাকে সহ সকল দায়িত্বরতদের পরিষদে যেতে নিষেধ করে। অন্যথায় খুন জখম করা হবে বলে আমি লোকমুখে জানতে পেরেছি। তবে তিনি ঢালাওভাবে বিএনপি নেতাকর্মীর উপরে দোষ চাপাননি। তিনি বলেন, আমি বি এন পি, আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ভোটে ৩ বার নির্বাচিত হয়েছি। ৫ আগস্টের পর প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছি। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিও ভালো লোক। এলাকার বেশীরভাগ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা ভালো লোক কোনরুপ হানাহানি, প্রতিহিংসা মূলক কাজে জড়িত না। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল প্রতিহিংসা মূলক কাজে জড়িত। তাদের কাজ রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করা। তারা জনগণের পাশে দাড়াতে ব্যর্থ হয়ে বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে নিজেদের জাহির করতে অপচেষ্টা চালায়। চান মাস্টার, সাইয়্যিদ হাওলাদার এধরণের নোংরা কাজে জড়িত হয়ে রাজনৈতিক পদ পদবী দেখিয়ে দলকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। তিনি মিন্টুর উপর হামলার ব্যাপারে থানা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি এখন পর্যন্ত কোন সমাধান দেননি। অভিযোগের ব্যাপারে মগড় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সাইয়্যিদ হাওলাদার ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, পুরো ঘটনাই ভন্ডামি। আমরা এলাকার লোক মিলিয়ে বিজয় দিবস উদযাপন করি। তারা বিজয় দিবস উদযাপন করেনি। এ ব্যাপারে লোকজন জিজ্ঞাসা করলে তারা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে এধরনের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে অভিযোগ করেছে।