বরিশাল
বরিশালে ওয়ারেন্টভুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকে নিয়ে আসামী ধরতে গিয়ে বিপাকে পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বৈরাচারী সরকার পালিয়ে গেলেও কৌশলে পুলিশ তাদের ছত্রছায়ায় রেখেছে এমন কথা এতদিন মানুষের মুখে মুখে শোনা গেলেও গতকাল তার প্রমাণ মিলেছে বরিশাল নগরীতে। বিষয়টি আলোচনায় আসলে একেকজন পুলিশ একেক ধরনের বক্তব্য দিচ্ছে। মিথ্যাকে সত্য বানানোর চেষ্টায় পুলিশ নানামুখী বক্তব্য দিচ্ছেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বরিশাল নগরীর রুপাতলিতে কামাল নামের এক আসামিকে ধরতে যায় কোতোয়ালি মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর মাজেদসহ একটি টিম। ঐ টিমে খালেদ খান রবিনকে পুলিশের সোর্স পরিচয় দিতে দেখা গেছে। রবিন চরকাউয়া এলাকার সাদেকুর রহমান খলিল খানের ছেলে ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। গত বছরের ৪ আগস্ট বরিশাল নগরীর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করেন এই রবিন। সেই মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। এরকম একজন ছাত্রলীগের নেতাকে পুলিশের সোর্স পরিচয়ে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সাহায্য করায় পুলিশের প্রতি ক্ষোভ জেড়েছেন এলাকাবাসী।
রুপাতলী এলাকার বাসিন্দা মনির খলিফা বলেন, ১১ এপ্রিল রাতে রুপাতলী হাউসিং এলাকার সিকদার প্যালেসে কামালকে গ্রেফতার করতে আসে পুলিশ। তখন পুলিশের সাথে থাকা ছাত্রলীগ নেতা খালেদ খান রবিনকে দেখে তার বিষয়ে জানতে চায় কামালের স্ত্রী অনামিকা জেসমিন। সেসময় রবিন ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়। উপস্থিত লোকজন পুলিশের কাছে রবিনের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা তাদের সোর্স বলে পরিচয় দেয়। রবিন পালিয়ে যাওয়ার পর তার মোটরসাইকেলটি চালিয়ে নিয়ে যায় কোতোয়ালি মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর পিনাকি।
পিনাকি বলেন, মোটরসাইকেল আমি মাজেদ স্যারের কথায় নিয়ে আসছি। পরে মাজেদ স্যার আবার মোটরসাইকেলটি নিয়ে যায়।
এদিকে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, রবিন নামে কাউকে আমি চিনিনা। তবে ছাত্রলীগ নেতা রবিন সাব-ইন্সপেক্টর মাজেদের সোর্স বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ ঘটনা জানতে সাব-ইন্সপেক্টর মাজেদকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি তিনি।
পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারী সরকারের অন্যতম হাতিয়ার ছাত্রলীগ কিভাবে পুলিশের সোর্স হয় সে-নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।
ঘটনার সময় উপস্থিত সাধারণ মানুষ বলেন, ছাত্রলীগ নেতাকে সোর্স বানিয়ে এসআই মাজেদের মত পুলিশরা এখনও এদেশে আওয়ামী লীগকে পূর্ণবাসন করতে সাহায্য করছে। এদের মতো পুলিশদের খুঁজে খুঁজে বের করে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করেন তারা।
এবিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, রবিনের নামে যদি মামলা থেকে থাকে তাকে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে। এছাড়া তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।’