কলাপাড়া
কুয়াকাটা সৈকতে আনন্দ-উল্লাসে মেতেছেন পর্যটকেরা
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকত পর্যটকদের পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠেছে। ঈদের দিন বিকেল থেকে সৈকতে পর্যটকের আগমন শুরু হয়। আগত পর্যটকেরা সৈকতে আনন্দ-উল্লাসে মেতেছেন। অনেকে সমুদ্রের নোনা জলে গা ভাসিয়ে হইহুল্লোড়ে মেতেছেন। অনেকে প্রিয়জনকে নিয়ে সেলফি তুলছেন। অনেকে সৈকতের বিভিন্ন বাহনে উঠছেন।
গঙ্গামতি, লেম্বুর বন, ঝাউবন ও শুঁটকি পল্লিসহ সব পর্যটন স্পটে রয়েছে পর্যটকদের বিপুল উপস্থিতি। আগতদের ভিড়ে বিক্রি বেড়েছে পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোয়। বুকিং রয়েছে অধিকাংশ হোটেল-মোটেল। নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছেন ট্যুরিস্ট, থানা পুলিশ ও নৌ পুলিশের সদস্যরা।
যশোর থেকে আসা দম্পতি সুমন-সীমা বলেন, ‘পরিবার নিয়ে ঈদের ছুটিতে গতকাল কুয়াকাটায় ঘুরতে এসেছি। গতকাল সৈকতে তেমন পর্যটক ছিল না। কিন্তু সকালে পুরো সৈকত দেখলাম পর্যটকে মুখর। অনেক লোক একসঙ্গে দেখে বেশ ভালো লাগছে। তবে হোটেলে খাবারের দাম, ফটোগ্রাফারদের বাড়াবাড়ি এবং মোটরসাইকেলচালকদের ব্যবহার নিয়ে রয়েছে নানা রকম অস্বস্তি।’
বরগুনা থেকে আসা পর্যটক ইমন খান বলেন, ‘আজ সকালে মোটরসাইকেলে এখানে এসেছি। কুয়াকাটার উল্লেখযোগ্য স্পটগুলো ঘুরে সন্ধ্যায় ফিরে যাব।’ তিনি আরও জানান, সব জায়গাতেই পর্যটকদের ভিড় থাকায় আরও আনন্দ হচ্ছে।
সৈকত লাগোয়া কসমেটিকস দোকানি সুলতান আকন বলেন, ‘গতকাল আশপাশের এলাকার পর্যটক ছিল। বিক্রি মোটামুটি ভালোই হয়েছে। আশা করছি আজ আরও বেশি পর্যটক আসবে এবং আমরা বিগত এক মাসের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারব।’
সৈকতে হরেক পদের ভ্রাম্যমাণ আচার বিক্রেতা মোসলেম মিয়া বলেন, ‘রমজানে কুয়াকাটায় কোনো পর্যটক ছিল না। আমি গতকাল বিকেলে আমার ভ্রাম্যমাণ দোকান নিয়ে সৈকতে নেমেছি। রাতে বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। অনেক পর্যটক আসছে। আশা করছি আজ আরও বেশি পর্যটকের আগমন ঘটবে।’
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সদস্য আবুল হোসেন রাজু জানান, ঈদের ছুটিতে অনেক দিন পরে আজকে কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে। পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত এখন সৈকত। তাই পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল কুয়াকাটার ১৬টি পেশার মানুষ খুশি। সব পেশার মানুষই আজ পর্যটকদের সেবা দিয়ে আনন্দিত।
কুয়াকাটা ইলিশ পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আমাদের ৭০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। লম্বা এই ছুটিকে কেন্দ্র করে ভালো একটা সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি সামনের পুরো মাসজুড়ে ভালো পর্যটক পাব।’
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি মোতালেব শরীফ বলেন, ‘পর্যটকদের এমন উপচে পড়া ভিড় ৪ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি।’
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে ঈদের ছুটিতে আমরা বিভিন্ন পয়েন্টে ছয়টি টিম নিয়োজিত করেছি। ছুটির দিনগুলোতে বিশেষ করে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে। তাই তাদের সেবায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে।’