কলাপাড়া
কুয়াকাটায় কোটি টাকার মূল্যের জমি দখলের অভিযোগ আ.লীগ পরিবারের বিরুদ্ধে
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভার মহাসড়ক লাগোয়া কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল বাণিজ্যে নেমেছে একটি আওয়ামী লীগ পরিবার। জমির প্রকৃত মালিক হেলাল আকনের দাবী দখল বাণিজ্যে সহযোগিতা করেছেন বিএনপি’র প্রভাবশালী নেতারা। আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ রয়েছে দখল কার্যক্রম। যেকোনো মূহুর্তে কোটি টাকার মূল্যের ওই জমি বেদখল হওয়ার আশংকায় রয়েছেন হেলাল আকন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জেএল ৩৪ নং লতাচাপলী মৌজার এসএ ৯৬৪ নং খতিয়ানের মোট জমি ২২.৮৮ একর। উক্ত খতিয়ান থেকে পর্যায়ক্রমে ওয়ারিশদের নিকট থেকে ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর ৪৯৫১নং দলিল মূলে ০.৭০ একর জমির মালিক কুয়াকাটার বিনিয়োগকারী ওশান সিটির ব্যপস্থাপনা পরিচালক খন্দকার আলী আজম মারা গেলে তার স্ত্রী মোসাঃ নাসরিন আজম, কন্যা সুমাইয়া তাবাসসুম মেঘলা ও আমেনা তাবাসসুম নদী মালিক থাকেন। তাদের নিকট থেকে ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আমমোক্তার নামা দলিল মূলে ০.৩৮ একর জমির মালিক মো:হেলাল আকন।
কিন্তু নাসরিন আজম গংদের নামে বিএস রেকর্ড না হওয়ায় দলিল মূলে স্বত্ব ঘোষণার দাবিতে কলাপাড়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ১৫৭৪/২০২১ নং দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবাদী নূর হোসেন, আবুল কালাম, আলী আকবর, রুহুল আমিন আকনদের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি আদালত নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করেন। সম্প্রতি আদালতের নিষেধাজ্ঞা আমান্য করে ১৩ শতাংশ জমিতে আ.লীগ নেতা ও কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আবুল হোসেন ফরাজীর ছোটো ভাই আব্দুল কাদের ফরাজী ও খোকন ফরাজী পাকা বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করে জোরপূর্বক দখল নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এ সময় মহিপুর থানা পুলিশ দফায় দফায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু অদৃশ্য শক্তি প্রভাবে নির্মাণকাজ অব্যহত রাখেন কাদের ফরাজী গংরা। নিরুপায় হয়ে হেলাল আকন বিষয়টি আদালতকে অবগত করেন।
চলতি মাসের ১৩ তারিখ আদালত পুন:রায় হেলাল আকনের পক্ষে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন৷ বর্তমানে কাজ বন্ধ থাকলেও যেকোনো মুহূর্তে হেলাল আকনের খরিদীয় ১৩ শতাংশ জমি বেদখল হওয়ার আশংকা রয়েছে।
ভুক্তভোগী হেলাল আকন জানান, কাদের ফরাজী গংরা জমি তাদের দাবি করলেও আওয়ামী লীগের এতো বছরে তারা দখলে যায়নি। তার বাবা আলী আকব্বর ফরাজী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন।
তার বড় ভাই আবুল হোসেন ফরাজী কুয়াকাটা পৌরসভার ২ মেয়াদে কাউন্সিলর ছিলেন। তিনি কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতাও। ৫ তারিখের পরে আবুল ফরাজী আত্মগোপনে থাকলেও তার ছোটো ২ ভাই, আব্দুল কাদের ফরাজী ও খোকন ফরাজী কুয়াকাটা পৌর বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের সহযোগিতায় তার ক্রয়কৃত জমি দখলের পায়তারা চালাচ্ছেন।
হেলাল আকনের প্রশ্ন আ.লীগের ১৫ বছরে তারা দখলে গেলেন না কেন? তারা মূলত বিএনপির সুনাম নষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবে বিএনপি নেতাদের সহযোগিতা নিয়ে দখল বাণিজ্যে নেমেছেন।
হেলাল আকন আরও বলেন, আমি ৩৮ শতক জমি ক্রয় করে এতোদিন ২০ শতক জমি ভোগদখল করেছি। বাকি ১৮ শতক জমির এখনও বুঝে পাইনি। বর্তমানে আমার ভোগদখলীয় ২০ শতক জমি থেকে ১৩ শতক জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন কাদের ফরাজী গংরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল কাদের ফরাজী বলেন, এটা আমার জমি। আমার নামে বিএস রেকর্ড হয়েছে এবং আমি জমির খাজনা পরিশোধ করেছি। আমার জমিতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। থানা পুলিশের অনুরোধে আমি কাজ বন্ধ রেখেছি।
এ বিষয়ে মহিপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) অনিমেষ হালদার বলেন, পেট্রোল পাম্পের পিছনের একটি জমির বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আদালত ওই জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।