বরিশাল
মাদক পৌঁছে না দেওয়ায় মাদরাসাছাত্রকে নির্যাতন করে হত্যা
মাদক পৌঁছে দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় নির্যাতন করে বরিশালের লেচুশাহ অবৈতনিক মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আবু হুরাইফা শান্তর হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। দুজনকে আসামি করে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা করেন নিহতের মা সোহানী।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বাদী পক্ষের আইনজীবী গোলাম মর্তুজার কাছ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তিনি বলেন, বুধবার (১১ ডিসেম্বর) আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামলা আমলে নিয়ে কোতয়ালী থানার ওসিকে এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছেন
মামলার আসামিরা হলো, নগরীর প্যারারা রোডের বাসিন্দা ইসমাইল হাওলাদারের ছেলে সুজন (৩৭) ও সদর উপজেলার লামচরী গ্রামের মতলেব মোল্লার ছেলে মোস্তফা স্বপন (৩৯)।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী বরিশাল নগরীর বিবি পুকুর পাড়ে পিঠা বিক্রি করনে ও তার স্বামী লেজুশাহ অবৈতনিক মাদরাসা সড়কে পান-সিগারেটের ভাসমান দোকান চালান। তারা কাইনয়া থানা এলাকার পলাশপুরের ৫নং গলিতে থাকতো।
আসামিরা নগরীর বিভিন্নস্থানে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। মাদক পৌঁছানোর জন্য কৌশলে শিশু শান্তকে ব্যবহার করতো। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় সুজন পিঠার দোকানে এসে শান্তকে ডেকে নেয়। এর প্রায় ৩০ মিনিট পরে অসুস্থ অবস্থায় শান্ত দোকানে ফেরে।
শান্তর বাবা শাহীন আকন বলেন, আমার ছেলে অসুস্থ অবস্থায় এসে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। দ্রুত তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একবার জ্ঞান ফেরে। তখন শান্তকে কি হয়েছে জানতে চাইলে সে জানায়, পরটা ভাজি খাওয়ানোর কথা বলে সুজন আমাকে ডেকে নিয়ে পোটলা (মাদক) পৌঁছে দিতে বলেছিল। আমি রাজি না হওয়ায় সুজন ও স্বপন মারধর করেছে।
ওই রাতে শান্তর অবস্থা খারাপ হলে ঢকো মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় আমার ছেলে মারা যায়।
শাহিন বলেন, আমরা প্রথমে অসুস্থতা জনিত কারণে শান্তর মৃত্যু ধরে নিলেও, পরে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে যেন আমরা কোনো বাড়াবাড়ি না করি এজন্য স্বপন ও সুজন দোকানে এসে হুমকি দিয়ে যাওয়ায় সন্দেহ হয়। আমাদের ধারণা পুলিশ সঠিক তদন্ত করলে আমার ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। আমার ছেলে মাদক পৌঁছে না দেওয়ায় নির্যাতন করে মাদক কারবারিরা তাকে মেরে ফেলেছে।
আরেক আসামী স্বপন বলেন, সুজনের সাথে আমার চলাফেরা। সুজনের সাথে স্কুল কমিটি ও স্থানীয়ভাবে নানা লোকজনের সাথে শত্রুতা রয়েছে। শিশু শান্তর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি ষড়যন্ত্র হয়েছে, যে ষড়যন্ত্রে আমি ফেঁসে গেছি।