বরিশাল
বরিশালের সাবেক এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপু কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল-৩ আসনের সাবেক এমপি ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপুর জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির মামলার আসামি হিসেবে বরিশালের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর রহমান তার জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ তথ্য জানিয়েছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এএসআই খাদিজা বেগম।
তিনি জানান, মামলার আসামি হিসেবে সাবেক এমপি টিপু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে ১০ দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর জামিন ও রিমান্ড আবেদনের শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৩ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হয়েছিলেন গোলাম কিবরিয়া টিপু। তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ইউনিয়নের ঠাকুর মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট চলাকালে সকাল ১০টার দিকে আসামিরা রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে হামলা চালায়। এ সময় বিএনপি দলীয় প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ভোট কেন্দ্রে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আসামিরা।
এছাড়া মামলার বাদী আনোয়ার হোসেনের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে ভোটকেন্দ্র দখল করা হয়। পরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপুর ব্যালট পেপারে সিল মেরে তাকে অবৈধভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে।
গত ২১ নভেম্বর বাবুগঞ্জের দেহেরগতি ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন হেমায়েত বাদী হয়ে সাবেক এমপি টিপুকে প্রধান আসামি করে এবং নামধারী ১১ ও অজ্ঞাত আরো ১৫০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
ওই মামলার নামধারী অন্য আসামিরা হলেন, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ টিপু সুলতান, বাবুগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী এমদাদুল হক দুলাল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার খালেদ হোসেন স্বপন, উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ফারজানা বিনতে ওহাব, উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান মিলন, মাধবপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, রিয়াজ সরদার, মাধবপাশা ইউনিয়ন তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মো. সোহেল সরদার।
এদিকে সাবেক এমপি টিপুর আত্মসমর্পণের খবর পেয়ে মুলাদী ও বাবুগঞ্জ উপজেলার বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেন।