আমতলি
আমতলীতে ধসে পরা সেতু ৫ বছর ধরে খালে, ভোগান্তিতে মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আমতলীর হলদিয়া ইউনিয়নের বাঁশ বুনিয়া খালের ধসে পরা সেতুটি সংস্কারের অভাবে ৫ বছর ধরে খালে পরে আছে। সেতু না থাকায় ৬টি গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছে।
আমতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে ৪০ লাখ টাকা ব্যায় করে হলদিয়া ইউনিয়নের বাঁশ বুনিয়া খালে একটি লোহার সেতু নির্মান করা হয়।
সেতু দিয়ে জগৎ চাঁদ, মধ্য টেপুরা, উত্তর টেপুরা, দক্ষিণ টেপুরা, পূর্ব টেপুরা ও দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ আমতলী উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়ত করে আসছে।
এছাড়া এই সেতুর পশ্চিম পারে রয়েছে জেবি সেনের হাট সরকারী প্রাথিমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই সেতু পার হয়ে পূর্ব পার থেকে দুটি বিদ্যালয়ে প্রায় একশ থেকে দেড়শ শিক্ষার্থী প্রতিদিন আসা যাওয়া করে।
কিন্তু আকস্মিক ভাবে রোয়ানুর প্রভাবে ২০১৬ সালের ২১ মে শনিবার বিকেল ৫টার দিকে মুশল ধারে বৃষ্টির সময় কয়েক জন যাত্রী সহ সেতুটির মাঝ বরাবর ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের অংশ ধসে খালের পানিতে পরে যায়।
এর পর ৫বছর ধরে সেতুটি সংস্কারের অভাবে খালে পরে আছে। স্থানীয়রা নিরুপায় হয়ে ৫ বছর ধরে খেয়া নৌকায় পারাপার হচ্ছে।
স্রোতের টানে অনেক সময় বোঝাই নৌকা পানিতে ডুবে অনেক যাত্রী আহত হয়েছে বলে জানান গ্রামবাসী। জগৎচাঁদ গ্রামের ষাটোর্ধ আছিয়া বেগম বলেন, বাবা মোরা বুড়া মানুষ এই রহম ভাবে ডোঙ্গায় কইরা খাল পার অই ক্যামনে। এর চেয়ে মইরা যাওয়া ভাল।
স্থানীয় শিক্ষক মো. সেলিম হাওলাদার জানান, খালে ভাটার সময় কাদা পানি ভেঙ্গে স্থানীয় নারী পুরুষ খেয়া নৌকার মাধ্যমে এক পার থেকে অন্য পারে যাতায়ত করে। এতে তাদের ভোগান্তি আর বিরম্ভনার শেষ থাকে না।
জেবি শেনের হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশিশ কান্তি হালদার জানান, মহামারি করোনা পর যে কোন সময় স্কুল খুলে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করছে সরকার।
স্কুল খুলে দেওয়ার পর ছোট খেয়া নৌকায় করে কোমল মতি শিক্ষার্থীদের পারপার নিয়ে চিন্তায় আছি। এর আগে ৩-৪ বার নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। তখন অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছিল।
তারা এখন নৌকার কথা শুনলেই ভয়ে আতকে উঠেন। এছাড়া নৌকাডুবির ফলে তাদের মূল্যবান বই খাতা সম্পূর্ন নষ্ট হয়ে যায়।
দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবিএম ছোবাহান বলেন, সেতুর অভাবে খেয়া নৌকায় বিদ্যালয়ের শিশুরা পারপার হতে গিয়ে কাদায় জামা কাপর নষ্ট করে ফেলেন এ নিয়ে সারাদিন তাদের ক্লাশ করতে হয়ে এতে তাদের মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হয়ে যায় ফলে লেখা পড়ায় মন বসে না।
যতদ্রুত সম্ভব বিদ্যালয়ের শিশুদের কথা বিবেচনা করে সেতুটি নির্মান করা প্রয়োজন।
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিকা জানান, এলাকাবাসীর দু:খ দুর্দশা লাঘবের জন্য সেতুটি নির্মানের জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আমতলী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবদুল্লা আল মামুন জানান, ধসে যাওয়া সেতুটির স্থানে গার্ডার সেতু নির্মানের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে কাজ শুরু করা হবে।