পটুয়াখালী
অভাবে স্ত্রীর ওড়নায় লজ্জা নিবারণ, সেই ভিক্ষুক দম্পতি পেলেন সহায়তা
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ অর্থের অভাবে মানবিক জীবনযাপন করা পটুয়াখালীর সেই ভিক্ষুক দম্পতির পাশে দাঁড়াল উপজেলা প্রশাসনসহ কয়েকটি সংগঠন। তাদের কাছে জামা-কাপড়সহ খাদ্যসামগ্রী ও শীতবস্ত্র পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লতিফা জান্নাতি ওই দম্পতির ঘরে খাবার-কাপড়সহ বিভিন্ন সহায়তা নিয়ে তাদের বাড়িতে পৌঁছান। এ সময় সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন আলম, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. হেমায়েত উদ্দিন, পটুয়াখালী ইউথ ফোরামের সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম, পটুয়াখালী ইউথ ফোরামের নির্বাহী পরিচালক মো. হাসিবুর রহমান, সদস্য মীর মহিব্বুল্লাহ্, সদস্য রিফাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনের পক্ষ থেকে শাড়ি-লুঙ্গি ও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন শাহীন নামের এক ব্যক্তি। শহরের ফোকাস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পক্ষ থেকে খাবার ও কাপড় বিতরণ করেন শিবলী। দুটি কম্বল পৌঁছে দেন পটুয়াখালী ইউথ ফোরামের নির্বাহী পরিচালক মো. হাসিবুর রহমান।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লতিফা জান্নাতি বলেন, ‘ওই দম্পতির বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তাদের জীবনমান উন্নয়নে ভাতার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাদের ঘরের ব্যবস্থাও করে দেয়া হবে।’
এই ভিক্ষুক দম্পতির নাম মো. সুলতান ডাক্তার (৯৫) ও সকিনা বেগম (৭০)।
বলা হয়, যতদিন শরীরে শক্তি ছিল, কাজ করেই সংসার চালাতেন মো. সুলতান। তখন ভালোই চলছিল সুলতান-সকিনা দম্পতির সংসার। এখন বয়সের ভারে কাজ করতে পারেন না তাই অভাব হয়েছে নিত্যসঙ্গী। দুই ছেলেও খোঁজ-খবর নেন না। থাকেন অন্যের জমিতে তোলা ভাঙা ঘরে।
জোটে না দুবেলা খাবার। ভিক্ষা করে লোকের বাড়ি থেকে চেয়ে আনা পান্তা ভাত শুকিয়ে চাল হলে সেগুলো ফের রান্না করে খান। এভাবেই লোকের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে খাবার যোগাড় করেন সুলতানের স্ত্রী সকিনা বেগম।
আক্ষেপের সুরে এই বৃদ্ধ বলছিলেন, ‘দুই বেলা ভাত জোটে না, তার মধ্যে লুঙ্গি? টাকার অভাবে বৌয়ের ওড়না পরে থাকি।’
৯৫ বছরের বৃদ্ধ সুলতান এলাকায় সুলতান ডাক্তার নামে পরিচিত। পটুয়াখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ১ম লেন বোহালগাছিয়া এলাকায় সত্তরোর্ধ্ব স্ত্রী সকিনা বেগমকে নিয়ে থাকেন তিনি।
এই দম্পতির দুই ছেলে মোস্তফা ও মোশাররফ। তারা যে যার মতো থাকেন। বাবা-মায়ের খোঁজ নেন না।