বরিশাল
অব্যবস্থাপনায় চলছে শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ভবন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ অব্যবস্থাপনা যেন ঘিরে রেখেছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ভবনটিকে। হাসপাতাল হিসাবে নব নির্মিত এ ভবনটি করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হলেও শুরু থেকেই নানা অব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত নানা সংকটে ভর করে চলছে গুরুত্বপূর্ণ ও করোনার মত ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা সেবা।
বহুতল ভবন হওয়া সত্ত্বেও লিফট ও জেনারেটর স্থাপন না করা, কর্তৃপক্ষের বারবার নোটিশ দেয়ার পরেও রোগীদের ব্যবহার্য্য ময়লা আবর্জনা ভবনের সামনেই ফেলে রাখাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত করোনা ভবন ও এর চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও যেন অনেকটা অসহায় এ ভবনটিতে সার্বিক শৃঙ্খলা ফেরাতে।
তথ্য মতে, পুরাতন ভবনে রোগীর চাপ কমাতে চিকিৎসা কার্যক্রমে গতি ফেরাতে বর্ধিত ও নতুন ভবন হিসাবে শেবাচিম হাসপাতাল চত্বরে নির্মাণ করা হয় ৫ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন। কিন্তু শুরু থেকে নির্মান কাজে নানা জটিলতা থাকায় ভবনটি ১০ তলা নির্মাণের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ৫ তলাতেই সীমাবদ্ধ থাকে নির্মাণ কাজ। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ভবন হস্তান্তরের পূর্বেই করোনা সংক্রমন শুরু হয়। তাই এ ভবনটিতেই শুরু করা হয় করোনা রোগীর চিকিৎসা।
চিকিৎসা কার্যক্রমের জন্য ভবনটি শতভাগ প্রস্তুত না হলেও জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত কিছু কাজও করে বরিশাল গণপূর্ত বিভাগ। কিন্তু তা করোনাসহ সার্বিক চিকিৎসা কার্যক্রমের জন্য শতভাগ পরিপূর্ণ ছিলো না। যে কারণে গত ৭ মাস ধরে নানা ভোগান্তি ও দুর্ভোগ সহ্য করতে হচ্ছে ভবনে থাকা করোনা রোগী ও তাদের স্বজনদের। রোগীর চাপের উপর ভিত্তি করে নিচ থেকে ৪ তলা পর্যন্ত চলে চিকিৎসা কার্যক্রম।
কিন্তু ভবনে কোন লিফট স্থাপন করা হয়নি। নেই জেনারেটর সুবিধাও। পানি ব্যবহারের জন্য বেসিন স্থাপন করা হলেও একটিতেও নেই কল। নিরাপত্তার অভাবে প্রায় প্রতিদিনই রোগী ও তাদের স্বজনদের টাকা পয়সা মোবাইল ফোনসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার্য জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে। এছাড়াও এ ভবনটির অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়। রোগী তথা চিকিৎসা কার্যে ব্যবহার্য ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা হচ্ছে ভবনটির সামনেই খোলা স্থানে।
ফলে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে করোনা রোগীর স্বজন ও আশেপাশের সাধারণ মানুষ। এ ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করা নিয়ে একে অন্যকে দোষারোপ করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সিটি করপোরেশন।
জানতে চাইলে হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন, অবকাঠামোগত সমস্যার জন্য দুষলেণ গণপূর্ত বিভাগকে। তিনি বলেন এক বছরেরও বেশী সময় পার হয়েছে দুটি লিফট এসেছে। কিন্তু গণপূর্ত বিভাগ তা এখনো স্থাপন করেনি। এছাড়া কয়েক মাস আগে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটরও এসেছে তাও সচল করা হয়নি।
এছাড়া পানির কলসহ অবকাঠামোগত যত সমস্যা আছে তা দেখা ও কাজ করে দেয়ার দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগের। তাদেরকে বার বার বলা সত্ত্বেও করি, করছি বলে করছে না। ময়লা আবর্জনার বিষয়ে তিনি বলেন এগুলো পরিস্কার করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের।
কিন্তু তারা তা করছে না। তারপরও আমরা জনবলসহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তা যতদূর সম্ভব করছি।
এ বিষয়ে জানতে বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অলিভার গুডাকে একাধিক ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। আর এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মোঃ ইসরাইল হোসেন।