ঝালকাঠি
দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
অঢেল সম্পদের মালিক ঝালকাঠীর আ’লীগ নেত্রী কেকাকে খুঁজছে পুলিশ
ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া ঝালকাঠি জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কেকাকে খুঁজছে পুলিশ। গত ৩০ আগস্ট রাত ৮টার দিকে এক গৃহবধূকে জিম্মি করে সারারাত নির্যাতন শেষে মুক্তিপণ আদায় ও মাথার চুল কেটে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুন মাখিয়ে দেন আওয়ামীলীগ নেত্রী কেকা ও তার লোকজন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী কেকাসহ ছয় জনকে আসামী করে মামলা করেন। মামলার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শারমিন মৌসুমি কেকা ঝালকাঠির এক নেতার প্রভাব খাটিয়ে গণপূর্ত অধিদফতর, এলজিইডি, জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন দপ্তরে রয়েছে তার একক আধিপত্য। ঘুষের বিনিময়ে কাজ বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একাধিক ঠিকাদারদের দাবী, ঘুষ ছাড়া কাজ মেলে না। অপর এক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা, বরিশাল ও ঝালকাঠিতে রয়েছে কেকার অঢেল সম্পদ। আর ক্ষমতাসীন দলীয় ব্যানারেই এই সকল সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি। তার এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডে কেউ বাঁধা দিলে তাকে পোষ্য নারীদের দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করাসহ হামলা মামলার শিকার হতে হয়েছে। এমনকি ঢাকার পাপিয়া চক্রের সদস্যদের সাথে তার মেলামেশার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও কিছুদিন আগে সুগন্ধা পৌর আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে শহীদ মিনার ভেঙে অবৈধভাবে স্টল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া রেজুলেশন করায় স্কুলের সভাপতি ১৩ সেপ্টেম্বর ঝালকাঠী সদর থানায় একটি জিডি করেন।
তার এ ধরণের বিতর্কিত কর্মকান্ডে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমীন মৌসুমী কেকাকে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় শহরের টাউন হলের জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার মো. শাহ আলম। তাকে বহিষ্কারের ব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম আলম খান কামাল জানান, দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে জেলা আওয়ামীলীগের এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসূমী কেকাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি। কেকার বহিষ্কারের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শতশত ভুক্তভোগী।