বরিশাল
অন্যের জমি দখলে সুইডেন নাছিরের কুটকৌশল,প্রতিপক্ষকে প্রান নাশের হুমকি
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীর জিয়া সড়ক সংলগ্ন নবগ্রাম রোড এলাকায় প্রতিপক্ষকে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে তার পৈত্তিক জমি দখলের পাঁয়তারা করার অভিযোগ উঠেছে সুইডেন প্রবাসী নাসির আহমদের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে জমির মালিক ভুক্তভোগী ইঞ্জিনিয়ার কে.এম আমিনুল ইসলাম গত ২৬ নভেম্বর কোতয়ালি মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করে পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিকারের দাবী জানিয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রমতে, জমির মালিক ইঞ্জিনিয়ার কে.এম আমিনুল ইসলামের চাচাতো বোন সুরাইয়া আক্তার জোসনাকে বিয়ে করেন সুইডেন প্রবাসী নাসির আহমদে। তার চাচা সেকেন্দার আলী নিজ কন্যা প্রবাসী নাসির আহমদে’র স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার জোসনার নামে ২ দশমিক ৮৪ শতাংশ জমির দলিল দেন। তবে দলিলে জমির যে দাগ উল্লেখ করে ভোগদখলের কথা বলা হয়েছে, তা আগেই সেকেন্দারের অন্য ওয়ারিশদের মধ্যে হেবা ঘোষনাপত্র দলিল দেওয়া হয়েছে।
এবং তারা প্রত্যেকেই দলিল মোতাবেক ভোগদখলে নিযুক্ত আছেন। এখন প্রবাসী নাসির আহমদে শ্বশুরের দেওয়া ওই জমি বুজে পেতে তার স্ত্রী’র চাচাতো ভাই ইঞ্জিনিয়ার কে.এম আমিনুল ইসলামের পৈত্তিক সম্পত্তি দখলের কুটকৌশল মেতে উঠেছেন। একের পর এক ষড়যন্ত্রে লাখ লাখ টাকার ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন ভুক্তভোগী ওই ইঞ্জিনিয়ার। আর একই পালে হাওয়া দিচ্ছে নাসিরের ভায়রা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ক্লার্ক পদে কর্মরত জহিরুল ইসলাম জহির এবং অপর ভায়রা মতিয়ার রহমান।
ইঞ্জিনিয়ার কে.এম আমিনুল ইসলাম’র পারিবারিক সূত্র থেকে আরো জানা গেছে, ওয়ারিশ সূত্রে তার চাচা সেকেন্দার আলী ৩০ দশমিক ৬৬ শতাংশ জমির মালিক। সেখান থেকে তার দুই ছেলে মুজিবুল খানকে ৯ শতাংশ ও জামাল খানকে ১৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং দুই কন্যা মাহমুদাকে ২ শতাংশ ও রোকসনাকে ৬ শতাংশ মোট ৩২ দশমিক ৩৩ শতাংশ জমি দলিল করে দেন। সর্বশেষ অপর কন্যা প্রবাসী’র স্ত্রী জোসনার নামে ফের ২ দশমিক ৮৪ শতাংশ জমির দলিল দেন।
এতে দেখা গেছে, তিনি তার সন্তানদের মধ্যে মোট ৩৫ দশমিক ১৭ শতাংশ জমির দলিল দিয়েছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেকেন্দার আলী ৩০ দশমিক ৬৬ শতাংশ জমির মালিক। ফলে অতিরিক্ত জমির যে দলিল তার কন্যা প্রবাসী’র স্ত্রী জোসনাকে দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ন অবৈধ। ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্য জমি থেকে কোন জমি নেই তাদের। তবে তা মানতে নারাজ প্রবাসী নাসির। সম্প্রতি নাসির সুইডেন থেকে এসে ওই জমি দখলে মরিয়া হয়ে ওঠে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের অবৈধ পন্থা অবলম্বন করছে নাসির। জমি না থাকা সত্ত্বেও মেয়ের জামাই নাসিরকে জমির দলিল দিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে আতংকের মধ্যে রেখেছেন তার চাচা। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ইঞ্জি: আমিনুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে নাছির ষড়যন্ত্র করে সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে আমার দোকানঘর ভেঙ্গে দেয়। এতে আমাদের পরিবারের প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আমিনুল ইসলাম বলেন, নগরীর ২২নং ওয়ার্ডে পৈত্রিক সুত্রে এসএ খতিয়ান ৩৬৩৩ ও ৩৬৩৪ এসএ ৫৬৮ নং দাগের ৯২ শতাংশ জমির রেকর্ডীয় মালিক আমার বাবা ও চাচারা। মোট জমি থেকে ৩ শতাংশ জমি এজমালী রাস্তার জন্য দেওয়া হয়েছে। বাকী ৮৯ শতাংশ জমি আমার বাবা ও দুই চাচার মধ্যে সমহারে বন্টন করার কথা থাকলেও রাস্তার জমি বাদ না দিয়ে মোট জমি ৯২ শতাংশ ধরে বন্টন করা হয়েছে। এতে প্রত্যেকের ভাগে ৩০.৬৬ শতাংশ জমি পড়েছে যা পারিবারিকভাবে আপোষ বন্টনের মাধ্যমে ভোগ দখলে রয়েছে সবাই। কিন্তু আমার বড় চাচা সেকান্দার আলী খান অবৈধভাবে ৩৫.১৭ শতাংশ জমির দলিল দেন তার ওয়ারিশদের মধ্যে। আর এতেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, চাচাতো বোন জোসনাকে ৫৬৮ নং দাগের জমি থেকে যে দলিল আমার চাচা দিয়েছে তা সঠিক হয়নি। কারন ওই একই দাগের মোট জমি আগেই অন্যান্য ওয়ারিশদের মাঝে দলিল দেওয়া হয়েছে। যে কারনে বিএস হাল ৭৭৬৫ দাগে জোসনার নামে কোন রেকর্ড হয়নি। কারন নাসিরের শ^শুর সেকান্দার আলী খান রেজিষ্ট্রি’র মাধ্যমে তার ওয়ারিশদের মধ্যে ভাগের চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ জমি বেশী দিয়েছে। এখন নাছির তার স্ত্রীকে দেওয়া ওই জমি দখল করার পায়তারা করছে। এজন্য ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী ভাড়া করে। সন্ত্রাসীদের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। বিভিন্ন মাধ্যমে এ বিষয়টি জানতে পেরে আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন আমিনুলসহ তার পরিবারের সদস্যরা। এমনকি ওই জমি দখলে প্রয়োজনে কোটি টাকা খরচ করারও হুংকার দিয়েছেন নাসির। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য নাসির আহমদের মোবাইলে কল দেয়া হলে তিনি বলেন, ভাই ব্যস্ত আছি, একটু পরে কল দিচ্ছি। পরে তিনি কল ব্যাক করেননি।