ভোলা
ভোলায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ, বেশি আক্রান্ত শিশুরা
ভোলায় বেড়েছে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে জেলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে। এতে দেখা দিয়েছে বেডের তীব্র সংকট। এক বেডে ২ থেকে ৩ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফলে বেডে জায়গা না হওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে স্বজনদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের প্রবেশপথের দুই পাশে মেঝেতে শিশুদের রেখে চিকিৎসা করাচ্ছেন স্বজনরা। শুধু তাই নয়, বেড যাদের ভাগ্যে জুটেছে তারা আবার এক বেডে ২-৩ জন করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এক বেডে একাধিক শিশু থাকার কারণে স্বজনদের কাটাতে হচ্ছে নির্ঘুম রাত।
রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ ওষুধ, ক্যানোলা, সিরিঞ্জ, নেবুলাইজার মাস্কসহ নানা কিছু বাইরে থেকে টাকা দিয়ে কিনতে হয়।
রোগীর স্বজন নাসিমা বেগম জানান, তার সন্তানের নিউমোনিয়া হওয়ায় তিনদিন আগে ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক তাকে ভর্তি করালেও বেড না পাওয়ায় আরও দুই শিশুর সঙ্গে একই বেডে তার সন্তানের চিকিৎসা চলছে।
তিনি আরও জানান, এক বেডে শিশু থাকলে অভিভাবকরা ঠিকমতো বসতেও পারে না। বাধ্য হয়ে হাঁটা-চলা করে রাত পার করি। কেউ কেউ কোনো রকমে বিছানা করে ঘুমাই, কিন্তু ঠিকমতো ঘুম হয় না।
রোগীর স্বজন তানজিলা আক্তার জানান, তিনি ছয়দিন আগে তার সন্তানকে ভর্তি করেছেন। বেড সংকট থাকায় তার সন্তানের সঙ্গে আরেক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। দুই শিশু এক বেডে থাকায় তাদের মায়েদের বেশ কষ্ট করতে হচ্ছে।
জুঁই আক্তার নামে আরেক নারী জানান, তার সন্তান নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় গতকাল ভর্তি করিয়েছেন। কিন্তু বেড না পাওয়ায় তিনি মেঝেতে রেখে সন্তানের চিকিৎসা করাচ্ছেন। এতে স্বজনদের হাঁটা-চলার কারণে ঠিকমতো বসতে পারেন না।
আমেনা বেগম জানান, শীতের মধ্যে সন্তানকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এতে শিশুর আরও ঠান্ডা লাগতে পারে। দ্রুত সুস্থ হবে কি না তাও জানি না।
আরেক শিশুর বাবা মো. হাসনাইন জানান, ভোলার সাত উপজেলার রোগীদের উন্নত চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। কিন্তু এখানে এসে শিশু রোগীদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বেড নেই, আবার মেঝেতেও ঠিকমতো জায়গা পাওয়া যায় না। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে শিশুদের জন্য অতিরিক্ত বেড বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছি।
ভোলা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. তৈয়বুর রহমান জানান, শীতের শুরুতে ভোলার সাত উপজেলায় নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। রোববার নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে দেড় শতাধিক শিশু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এরমধ্যে ৫৮ জন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।


