কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৭:০৮, আগস্ট ২৫ ২০২০ মিনিট

ঝালকাঠি প্রতিনিধি।। চাকরি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এমদাদুল হক মনিরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে কাঠালিয়ার আমুয়ার বাসীন্দা এক নারী বাদী হয়ে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ওসিকে তদন্ত করে আগামী ৪ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়ার আমুয়া গ্রামের ২২ বছরের এক তরুণীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনির প্রথমে চাকরি ও পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বরিশালসহ বিভিন্নস্থানে নিয়ে ৩ বছর ধরে ধর্ষণ করেন। কিন্তু পরিশেষে ওই তরুণী বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে কাঁঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মনির তাকে নানাভাবে হয়রানি করেন। গতকাল সোমবার কলেজ পড়ুয়া ওই তরুণী ধর্ষক সাবেক প্রেমিক মনির ও এই ধর্ষণে সহায়তাকারী মনিরের বন্ধু মিঠু সিকদারের বিরুদ্ধে বরিশাল নারী ও শিশু আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বিচারের আর্জি জানান। আদালতের একটি সূত্র জানায়, উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তরুণীর করা অভিযোগটি আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ আমলে নিয়ে পুরো ঘটনা তদন্তে বরিশাল কোতয়ালী থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। তরুণী অভিযোগে উল্লেখ করেন, তৎকালীন কাঁঠালিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মনির প্রথমে ২০১৭ সালের শুরুতে তাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বন্ধু মিঠু সিকদারের বরিশাল শহরের কাকলীর মোড়ের শাহীন প্লাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডেকে নেন। এবং সেখানেই বন্ধু মিঠুর উপস্থিতিতে প্রেম প্রস্তাব করেন। এতে তরুণী সম্মত হলে পরে তাকে বরিশাল শহরের আগরপুর রোডে মিঠুর বাসাসহ একাধিক স্থানে রেখে স্বামী-স্ত্রীর ন্যায় বসবাস করেন। কখনও কখনও কলেজছাত্রীকে নিয়ে লঞ্চে ঢাকায় যাতায়াতকালে কেবিনে ধর্ষণ করেন। এই তরুণী ও উপজেলা চেয়ারম্যান মনির একই গ্রামের বাসিন্দা। নির্যাতিতা তরুণী জানান, বিগত ৩ বছর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মনির তাকে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরে বিয়ের জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করলে নানান অজুহাতে কালক্ষেপন করাসহ বন্ধু মিঠুকে নিয়ে একের পর এক নাটকের জন্ম দেন। এমনকি একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে দাবিও করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। কিন্তু পরবর্তীতে তরুণী সামাজিক স্বীকৃতি চাইলে নানান টালবাহানা এবং পুরো ঘটনা ধাঁমাচাঁপা দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। সর্বশেষ গত ১৯ আগস্ট বিষয়টি নিয়ে বরিশাল আদালতের সিনিয়র আইনজীবী ওবায়দুল্লাহ সাজু উভয় পক্ষ নিয়ে সমঝোতার বৈঠকে বসলেও সমাধানে আসতে পারেননি।এদিকে এরই মধ্যে আ’লীগ নেতা মনির অপর এক মেয়েকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করার খবর কম-বেশি জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ তরুণী আইনের আশ্রয় নিতে কোতয়ালী থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন। কিন্তু থানা পুলিশ অভিযোগটি গ্রহণ না করায় সোমবার বরিশাল আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। তরুণীর আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ জানান, বিচারক মামলাটি আমলে নিয়েছে এবং কোতয়ালী থানা পুলিশকে তদন্ত করে আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।তবে নারী কেলেংকারির এই অভিযোগসমূহ অস্বীকার করে উপজেলা চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির বলেন, প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপ রাজনৈতিকভাবে হয়রানির উদ্দেশে তার বিরুদ্ধে নানান ষড়যন্ত্র করছে। তরুণীর এই মামলাটি সেই ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।