শোকদিবসের ব্যানার অপসারণের নির্দেশ দিলেন সরকারি কর্মকর্তা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ০০:৫১, আগস্ট ১১ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস বাংলার ইতিহাসে ও বাংলাদেশের জন্য একটি কালো দিন। কেননা বাঙালি জাতির জন্য একটি শোকাহত দিন হিসেবে এ দিনটিকে পালন করা হয়। এই দিবসকে স্মরন করে একটি সরকারি ভবনে জাতির জনকসহ শহীদদের ছবি সংবলিত ব্যানার টাঙিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। এমনকি দ্রুত ওই ব্যানার অপসারনের নির্দেশও দিয়েছেন খোদ সরকারি কর্মকর্তা নিজেই। তবে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদদের ছবি সংবলিত ব্যানার অপসারনের কথা জানতে পারলে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয় আ’লীগের নেতা-কর্মীরা। তারা সরকারি ওই কর্মকর্তার বিচারের দাবী জানিয়েছেন। সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘বরিশাল সদর দলিল লেখক কল্যাণ সমিতি’র পক্ষ থেকে শহরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউস্থ নির্মানাধীন বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিস ভবনে টাঙানো হয় জাতির জনকসহ শহীদদের ছবি সংবলিত একটি ব্যানার। এমন বিষয়টি নজরে আসে বরিশাল ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব একাউন্টস মো. একে আজাদ খানের। হঠাৎ করেই তিনি ব্যানারটি অপসারনের জন্য জেলা রেজিস্ট্রার পথিক চন্দ্র সাহাকে জানান। পরবর্তীতে জেলা রেজিস্ট্রার ‘বরিশাল সদর দলিল লেখক কল্যাণ সমিতি’র সভাপতি হাবিবুর রহমান খোকনকে ব্যানারটি খুলে ফেলতে বলেন। এমন খবরে হতাশ হয়ে পড়েন আওয়ামী লীগ নেতা খোকন। পরে বিষয়টি স্থানীয় আ’লীগের নেতা-কর্মীদের জানলে ক্ষোভের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্নের। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও দলিল খেলক সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান খোকন বলেন, জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে সব দপ্তর ও সংস্থার কার্যালয়ে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট অফিসের দৃশ্যমান স্থানে জাতীয় শোক দিবসের ভাবগাম্ভীর্য অক্ষুন্ন রেখে ব্যানার টাঙানোর নির্দেশনা রয়েছে। তাই হিসাবরক্ষণ অফিসের নির্মানাধীন ভবনের দৃশ্যমান স্থানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের ছবিসংবলিত একটি ব্যানার টাঙিয়েছি। এই ব্যানারটি অপসারণ করতে হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে গতকাল বুধবার জেলা রেজিস্ট্রার পথিক চন্দ্র সাহাকে ফোন করা হয়। তিনি ওই দিনই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মুঠোফোনে বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন। এমন নির্দেশনায় আমিসহ আরও অনেকে মর্মাহত হয়েছি। এবং এই বিষয়টি শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের জানালে তারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি দলিল লেখক সমিতির সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে এবং খোদ বঙ্গবন্ধুর ব্যানার অপসারণ করতে বলায় বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিশাল ভবনের এক পাশে একটি ব্যানার টাঙানো হয়েছে, বাকি যে জায়গা রয়েছে তাতে আরও ১০টির বেশি ব্যানার টাঙানো সম্ভব। তারপরও কেন আমাদের ব্যানারটি অপসারণ করতে বলা হল এনিয়ে প্রশ্ন তুলতেই হচ্ছে।’ বিশেষ করে এখানে কোনো রাজনীতি বা অসৎ উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে কী না তা ভাবতে হচ্ছে। বরিশাল জেলা রেজিস্ট্রার পথিক চন্দ্র সাহা জানান, গতকাল দুপুরে হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে এক ব্যক্তি ফোন করে বলেন তাদের ভবনে দলিল লেখকদের টাঙানো জাতির জনকসহ শহীদদের ছবি সংবলিত ব্যানারটি খুলে ফেলতে হবে। এই বিষয়টি আমি দলিল লেখক সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান খোকনকে জানিয়ে দিয়েছি। এই বিষয়ে ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব একাউন্টস মো. একে আজাদ খান বলেন, ব্যানারটি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়ার ক্ষেত্রে অসৎ কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই। শোকের মাসে সরকারি সব প্রতিষ্ঠান একই ব্যানার টাঙিয়ে থাকে। আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকেও জাতীয় শোক দিবসের একটি ব্যানার টাঙানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে কিন্তু এর আগেই দলিল লেখকরা একটি ব্যানার টাঙিয়েছে। তাই ব্যানার সরিয়ে অন্যত্র টাঙাতে বলা হয়েছে। এর বাইরে কিছু বলা হয়নি।