বরিশালে কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ, নেই সংযোগ সড়ক

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:০৯, জুন ১৫ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ সংযোগ সড়ক না হওয়ায় কাজে আসছে না মুলাদীতে নাজিরপুর ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ সেতু। সরকার প্রায় ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করলেও সুফল পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। সেতু নির্মাণের প্রায় তিন বছরেও যান চলাচল করতে পারছে না। এতে সুবিধার বদলে দুর্ভোগ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তবে দ্রুত সেতুটির সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তারা। জানা গেছে, মুলাদী উপজেলার সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে ২০১৪ সালে আড়িয়াল খাঁ নদে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। নাজিরপুর ইউনিয়নের রামারপোল এলাকায় প্রায় ৬৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। সাধারণ মানুষের আশা ছিল, সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে বাস চলাচল শুরু হবে। এতে সহজেই ঢাকা-বরিশাল যাওয়া-আসা করতে পারবেন এ এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু সেতু নির্মাণ হওয়ার প্রায় তিন বছর পরও সংযোগ সড়কের কাজ হয়নি। ফলে সেতুতে গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটেও পার হওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতু নির্মাণের পরই নদীতে চলাচলের খেয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। সংযোগ সড়ক না হওয়ায় বালুর বস্তা ও কংক্রিট ব্লক দিয়ে কোনোমতে চলাচল করছেন তাঁরা। সেতুতে গাড়ি চলাচল না থাকায় রোগী নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। রামারপোল এলাকার গোলাম মোস্তফা বলেন, সেতুর কাজ শেষে সংযোগ সড়কে বালু ফেলা হয়েছিল। পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষায় বালু নেমে গেছে। এরপর আর কোনো কাজ হয়নি। এখন সেতুতে উঠতে অনেক কষ্ট হয়। বিশেষ করে অসুস্থ ও বৃদ্ধদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। নাজিরপুর গ্রামের আলতাফ হোসেন বলেন, ‘সেতুটি চালু হলে মুলাদী উপজেলা থেকে গৌরনদী হয়ে ঢাকা পর্যন্ত বাস চলাচল সম্ভব হতো। পদ্মা সেতু চালুর সঙ্গে এই সেতুটি চালু করা গেলে ৪-৫ ঘণ্টায় মানুষ ঢাকা যেতে পারত। সেতুটির সংযোগ সড়ক কবে হবে, নাকি আদৌ হবে না, তা আমাদের জানা নাই।’ নাজিরপুর ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাদল খান বলেন, সেতুটির সংযোগ সড়ক না হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। ইতিমধ্যে সেতুটি নদীভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। সরকার এত টাকা খরচ করে সেতু করেছে কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনো কাজে আসছে না। সেতুর সংযোগ সড়কে বালু ফেলে রাখা হয়েছে। এতে চলাচল করা যায় না। আবার কোনো কোনো জায়গায় মাটি না থাকায় অনেক কষ্ট করে সেতুতে উঠতে হয়। এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী তানজিলুর রহমান বলেন, সেতু নির্মাণের পরে কারিগরি সমস্যার কারণে সংযোগ সড়কে বালু দিয়ে রাখা যাচ্ছিল না। পরে সেতুর পূর্ব প্রান্তে নদীর ভাঙন দেখা দেয়। সেতুটি রক্ষার জন্য ওই প্রান্তে একটি স্প্যান বাড়াতে হবে। পরে সংযোগ সড়কের কাজ করা হবে। এ ছাড়া সেতুতে হেঁটে চলার উপযোগী করার জন্য বালুর বস্তা দিয়ে সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। এলজিইডির বরিশাল জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো. জামাল উদ্দিন জানান, সেতুর স্প্যান বাড়ানো এবং সংযোগ সড়কের নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে। অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সেতুর স্প্যান বৃদ্ধি ও সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা হবে।