ভোলায় বসত বাড়ির সিমানা গুড়িয়ে দিয়ে বিধবার জমি দখলের চেষ্টা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:৪০, জানুয়ারি ০৫ ২০২২ মিনিট

চরফাসন প্রতিনিধি ॥ ভোলার চরফ্যাসনের দুলারহাটে ৩ লক্ষ টাকা চাঁদার দাবীতে বিধবার ৬০ বছরের দখলীয় বসত বাড়ির সিমানা প্রাচীর গুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় নুরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। প্রায় কোটি টাকার জমি জবর দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের সহযোগী স্থানীয় ভূমিদস্যু ফয়েজ উদ্দিন ও স্বাস্থ্য সহকারী ফিরোজ গং’রা। গত সোমবার ভোর রাতে দুলারহাট থানার চর তোফাজ্জল গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভূক্তভোগী বিধবা হালিমা খাতুনের পৈতৃক ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত বসতভিটা ভোগ দখল করতে হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। কিন্তু বিধবা হালিমা খাতুন তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নির্দেশে স্থানীয় ভূমিদস্যু ফয়েজ উদ্দিন ও স্বাস্থ্য সহকারী ফিরোজের নেতৃত্বে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার বসত বাড়ির সিমানা প্রাচীর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নিয়ে জমি জবর দখলের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে হামলার বিষয়টি জানিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন গৃহকত্রী বিধবা হালিমা খাতুন। কিন্তু কোন প্রতিকার না পেয়ে বুধবার (০৫ জানুয়ারি ২০২২ ইং) দুপুরে দুলারহাট থানায় ফয়েজ উদ্দিন ও ফিরোজ সহ কয়েকজনকে আসামী করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, দুলারহাট থানার চর তোফাজ্জল মৌজায় এসএ ৭৮/১ নং খতিয়ান ও দিয়ারা ৬৭৬ নং খতিয়ানের হালে ৪২১১-৪২১২ নং দাগে ২৮ শতাংশ জমির খরিদ সুত্রে মালিক হন তার বাবা ডাক্তার তোফজ্জল হোসেন। বাবার মৃত্যুর পর মেয়ে হালিমা খাতুনসহ ৪ বোন ৬ ভাই ওই জমির ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হন। বাবার ওয়ারিশ জমিতে বসত বাড়ি ও ঘর নির্মান করে সিমানা প্রচীর দিয়ে ভোগ দখলে আছেন তারা। সোমবার দিবাগত ভোর রাতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের অনুসারী ফয়েজ উদ্দিন ওই জমি ভোগ দখল করতে হলে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে জানান। দাবীকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করায় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নির্দেশে স্থানীয় ভূমিদস্যু ফয়েজ উদ্দিন ও স্বাস্থ্য সহকারী ফিরোজের নেতৃত্বে কয়েকজনের দুর্বৃত্তদল তার বসত বাড়ির সিমানা প্রাচীর ভেঙে গুড়িয়ে দেয় এবং প্রায় লক্ষাধীক টাকার গাছ কেটে নিয়ে জমি জবর দখলের চেষ্টা করে। এসময় বিধবা ও তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে তাদের মারধর করেন এবং হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) বরাবরে ফয়েজ উদ্দিনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে কোন প্রতিকার না পেয়ে বুধবার দুপুরে দুলারহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফয়েজ উদ্দিন জানান, হালিমা ও তার পরিবার ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা জবর দখল করে আছে। পরিষদের পক্ষ থেকে ওই জমি উচ্ছেদ করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন টাকা দাবীর বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, জমি ইউনিয়ন পরিষদের। ওই জমি তারা জবর দখল করে আছেন। এখন জনগনের জমি জনগন উচ্ছেদ করছেন। দুলারহাট থানার ওসি মো. মুরাদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।