বরিশালে গণপরিবহণে ভাড়া নৈরাজ্য চলছেই, ক্ষুব্ধ যাত্রীরা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:৩৪, নভেম্বর ৩০ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ বরিশাল নগরীর গণপরিবহণে ভাড়া নৈরাজ্য চলছেই। অধিকাংশ রুটেই দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এই নৈরাজ্য ঠেকাতে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় যাত্রীরা চরম ক্ষুব্ধ। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার জানিয়েছেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, ডিজেল ও এলপি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ-লঞ্চঘাট রুটে যাত্রীপ্রতি ২০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। আগে নেওয়া হতো ১০ টাকা। এই রুটের যে কোনো জায়গায় যাত্রী নামলেই ৫-১০ টাকার পরিবর্তে আদায় করা হচ্ছে ১০-১৫ টাকা। একইভাবে রুপাতলী থেকে লঞ্চঘাট, হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা থেকে কাকলির মোড় রুটে চলাচলকারী থ্রি-হুইলারের চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। আগে হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা থেকে কাকলির মোড় পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হতো ১০ টাকা। এখন আদায় করা হচ্ছে ১৫ টাকা। পথে যে কোনো জায়গায় নামলে যাত্রীকে দিতে হচ্ছে ১০ টাকা। অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে যাত্রীরা তর্কে জড়ালেও শেষ পর্যন্ত মান-ইজ্জতের ভয়ে দাবি করা অর্থ দিতে বাধ্য হন। থ্রি-হুইলারচালকদের দাবি, তেল-গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, যানের মেরামত খরচ ও দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় মালিকরা যানের ভাড়া বাড়িয়েছেন। এ কারণে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রিফাত জানান, কয়েক দিন আগে রুপাতলীর র‌্যাব অফিসের সামনে থেকে উঠে নগরীর সদর রোডস্থ সাহেবের গোরস্তান মোড়ে নামলে সিএনজিচালিত থ্রি-হুইলারচালক ১৫ টাকা দাবি করেন। চালককে নিয়ে পার্শ্ববর্তী পুলিশ বক্সে অভিযোগ দিলে সিএনজিচালক ১৫ টাকার পরিবর্তে ১০ টাকা নেন। নগরীর বান্দ রোডের একটি নার্সারির অফিস সহায়ক জানান, বান্দ রোড থেকে আগে তার বাসা কাউনিয়ায় যেতে থ্রি-হুইলারে খরচ হতো ১০ টাকা। এখন নেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা। অফিসে যাওয়া-আসায় প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে ৪০ টাকা। মাসিক বেতন ৩ হাজারের ১২শ টাকা চলে যাচ্ছে যাতায়াতে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধ ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে গরিব মানুষের বেঁচে থাকাই দায় হবে। হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা থেকে কাকলির মোড়ে চলাচলকারী গ্যাসচালিত থ্রি-হুইলারচালক ফজলুর রহমান জানান, আগে এলপি গ্যাসের একটি সিলিন্ডার কিনতেন ৮৫০ টাকা লাগত। এখন লাগে ১২৫০ টাকা। তাছাড়া গাড়ির মালিকরাও ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি গাড়ির যন্ত্রাংশসহ মেরামতকাজেরও খরচ বেড়েছে। তাই এখন যাত্রীপ্রতি ১০ টাকার পরিবর্তে ১৫ টাকা আদায় করা হচ্ছে। পথে যে কোনো স্থানে নামলে ১০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। বরিশাল জেলা থ্রি-হুইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কামাল হোসেন লিটন মোল্লা বলেন, নগরীতে চলাচলরত থ্রি-হুইলারের ভাড়া বাড়েনি। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার তানভীর আরাফাত জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির মাধ্যমে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ন্ত্রণ ও অভিযুক্ত চালকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া কোনো যাত্রী অভিযোগ দিলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।