এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে নারী স্টাফকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:৫৪, নভেম্বর ০৭ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরগুনার আমতলী উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে মজুরিভিত্তিক (মাস্টার রোল) নিয়োগ পাওয়া নারী স্টাফকে (মালি) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ওই নারী এ ঘটনার বিচার চেয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বৃহস্পতিবার সকালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি এখন আমতলীতে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। ওই নারীর লিখিত অভিযোগে জানা যায়, তার স্বামী আমতলী উপজেলা পরিষদে মজুরি ভিত্তিক ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ৭ বছর পূর্বে তার স্বামী মারা যায়। ৬ বছর পূর্বে মজুরিভিত্তিক মালির চাকরি পেয়ে ওই নারী আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসে মালির কাজ করে আসছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল ইসলাম আমতলীতে ৬ মাস পূর্বে যোগদান করেন। তিনি ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ভুক্তভোগী ওই নারী স্টাফকে কারণে অকারণে তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি ও কুপ্রস্তাব দেন। এতে তিনি রাজি হয়নি। তারপরও মাঝে মধ্যে ওই নারী স্টাফকে সুযোগ পেলেই কাছে ডেকে যৌন হয়রানী করেন। অসহায় নারী চাকরী হারানোর ভয়ে সব কিছু নীরবে সহ্য করতেন। এক সময় ওই নারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে দিনে ও রাতে অন্তত ১০ থেকে ১৫ বার কল দিয়ে তাকে ডিস্টার্ব করে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী ওই নারী স্টাফ অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবগত করেন। অফিস স্টাফরাও নীরবতা পালন করেন। বৃহস্পতিবার বিকাল অনুমান ৪টার দিকে অফিসে আসেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল ইসলাম। তখন ওই নারী স্টাফ (মালি) উপজেলা পরিষদের সার্ট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর (সিএ) আ. সালামের রুমে বসে ছিলেন। এ সময় ওই কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে আ. সালামকে তার রুম থেকে বের হতে বলেন। আঃ সালাম রুম থেকে বের হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই নারী স্টাফকে সরকারি জমি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রকাশ্যে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে ভুক্তভোগী ওই নারী স্টাফ লিখিত অভিযোগে প্রকাশ করেন। ওই নারী এক ভিডিও সাক্ষাতকারে ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, স্যার এখন বিভিন্ন মানুষের দ্বারা আমাকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা কবির মালাকারসহ বেশ কয়েকজন জানান, আমরা উপজেলা নির্বাচন অফিসে কাজ শেষ করে যাওয়ার সময় ওই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল ইসলাম মোবাইল ফোনে  বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। আমাকে হেও করতে ছোট্ট একটি ঘটনাকে অনেক বড় আকারে বিস্তার করছে ষড়যন্ত্রকারীরা। আমার মনে হচ্ছে ওই নারীকে দিয়ে কেউ দরখাস্ত করিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম আব্দল্লাহ বিন রশিদ বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। বর্তমানে তিনি ছুটিতে ঢাকায় অবস্থান করছেন। বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান  বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ হয়েছে। ইউএনও ছুটিতে আছেন। ছুটি থেকে এসে তদন্ত করবেন। সত্যতা পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।