নিস্তব্দ লেবুখালী ফেরিঘাট

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:০৯, অক্টোবর ২৪ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পায়রা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে প্রায় ১১২ কিলোমিটার বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের ফেরি বিড়ম্বনা বন্ধ হলো। সেইসঙ্গে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী ফেরিঘাটে বন্ধ হলো ফেরি চলাচল। রোববার (২৪ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে অনেকটাই নিস্তব্দ হয়ে যায় ফেরিঘাটসহ আশপাশের এলাকা। নেই চলাচলরত ফেরির ইঞ্জিনের শব্দ। আবার ঘাটে নোঙর করা ফেরিতে বাজেনি কোনো হুইসেল। ছিল না ঘাট কেন্দ্রীক মানুষের কোলাহল। তবে রোববার সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত স্বাভাবিক সময়ের থেকে বেশি কর্মব্যস্ততার মধ্যে ছিলেন লেবুখালি ঘাটের শ্রমিক ও চার ফেরির ৪০ জন স্টাফ। তারা জানান, পায়রা সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে রোববার সকাল থেকেই গাড়ির চাপ ছিল লেবুখালি ফেরিঘাটে। সাধারণ পরিবহনের সঙ্গে অতিথিদের গাড়ির চাপ বাড়ায় চারটি ফেরি চালানো হয়েছে। যদিও এ ঘাটের শেষ কর্মদিবসের সকালে কাজের চাপ নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই তাদের। তবে স্মৃতির পাতা হাতড়ে কিছুটা খারাপ লাগার কথা জানিয়েছেন অনেকেই। লেবুখালী ঘাটের ফেরির চালক জাকির হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে এখানে কাজ করেছি, বহু স্মৃতি জড়িয়ে আছে এ ঘাটে। আজ ঘাটের শেষ কর্মদিবসে কিছুটা খারাপ লাগলেও সেতুটি যে উদ্বোধন হচ্ছে এটাই ভালো লাগা। আমাদের চাকরিটাই এমন, আজ এই ঘাটে তো কাল ওই ঘাটে। মাহাবুবুর রহমান নামে অপর ফেরি চালক বলেন, সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি লাঘব হচ্ছে এটাই ভালো লাগা। আবার এখানকার ফেরিগুলো অন্য কোথাও মানুষের দুর্গোভ লাঘবে কাজে আসবে। তবে ফেরির সঙ্গে সঙ্গে ঘাটের ওপর নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকাররাও অনেকটাই নিস্তেজ হয়ে পরেছেন। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, সেতুর কারণে ঘাটের তেমন কারোরই কোনো সমস্যা হয়নি। ফেরির ঢালে পটুয়াখালী প্রান্তে অবস্থিত পাগলার মোড় এবং বরিশাল প্রান্তে শেখ হাসিনা সেনানিবাসের পাশে দু'টি বড় বাজারের মতো গড়ে উঠেছে। যেখানে ঘাটের ব্যবসায়ীরা তাদের অবস্থান খুঁজে নিয়েছেন। আর এ দুই স্থানেই যাত্রীবাহীসহ পণ্যবাহী পরিবহন বিরতি দিবে, তাই সেখানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হকারদেরও উপস্থিতি স্বাভাবিক থাকছে। এদিকে ঘাটের স্টাফরা জানান, লেবুখালি ঘাটের সচল ফেরিগুলো বেকুটিয়া, মাছুয়া ফেরিঘাটে যাবে। আর প্রয়োজন অনুসারে গ্যাংওয়ে পল্টুনও সরিয়ে নেওয়া হবে অন্যত্র। উল্লেখ্য বরিশাল পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর এ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়ে ১৪৪৭ দশমিক ২৪ কোটি টাকা। ১৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটির প্রস্থ ১৯.৭৬ মিটার। এ সেতুতে ৩২টি স্প্যান ও ৩৩৮টি পাইল রয়েছে। যার মধ্যে মূল সেতুর পাইল সংখ্যা ৫২টি। এছাড়া পিয়ার সংখ্যা ৩১টি।