দুমকিতে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ ৪ মাস ধরে বন্ধ, দুর্ভোগে দুই ইউনিয়নের মানুষ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:৫১, অক্টোবর ০৫ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পটুয়াখালীর দুমকিতে মুরাদিয়া নদীর ওপর নির্মাণাধীন সিসি গার্ডার সেতু নির্মাণকাজ চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন সেতু এলাকার শিক্ষার্থীরা। সেতুটির নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাঁশ ও সুপারিগাছের সাঁকো দেওয়া হলেও জোয়ারের কারণে তা তলিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলার মুরাদিয়া ও শ্রীরামপুর ইউনিয়নের প্রান্তসীমার মুরাদিয়া নদীতে ২০২০-২১ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২৪ মিটার দৈর্ঘ্যে এবং ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের আরসিসি গার্ডার এই সেতুটি নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি টাকা। স্থানীয়রা জানান, ওই নদীর ওপর আগে একটি লোহার সেতু ছিল। তবে নতুন সেতু নির্মাণকালে পুরনো লোহার সেতুটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে সেখানে আরসিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আজাদ এন্টারপ্রাইজ। সেতু নির্মাণকাজ করতে গিয়ে নদীর দুদিকে বাঁধ দেওয়া হয়। এর পর সেতুর দুই পাড়ের অবকাঠামো নির্মাণ শেষ করে মে মাসে মূল সেতুর নির্মাণ শুরু হয়। বাঁধ দেওয়ার স্থানে মাটি ফেলে ভরাট করে সেতু নির্মাণের সেন্টারিংয়ের কাজও শেষ করে। শুধু বাকি থাকে আরসিসি ঢালাই। এদিকে মে মাসের শেষ দিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অধিক উচ্চতর জোয়ারের আঘাতে সেতুস্থলের দুই পাশের বাঁধের মাটি সরে গিয়ে নির্মাণাধীণ সেতুর অবকাঠামো (সেন্টারিং ও ওপরে বাঁধানো রড ) ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। এর পর থেকেই সেতুটির নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। সোমবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মুরাদিয়া নদীর নির্মাণাধীন সেতুর উভয় পাড়ে আরসিসি গার্ডার দাঁড়িয়ে আছে। পশ্চিম পাড়ে বেশ কিছু নির্মাণসামগ্রী স্তূপ আকারে পড়ে আছে। সেতুর নির্মাণ স্থানটি প্রায়শই জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়; আবার ভাটায় শুকায়। নদীর পূর্ব পাড়ে দক্ষিণ মুরাদিয়া মহিলা ফাজিল মাদ্রাসার অবস্থান থাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা বাঁশগাছের একটি সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে। ওই মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শাহজালাল কাজী জানান, তার মাদ্রাসায় ছাত্রীর সংখ্যা ৩২৫ জন। এর মধ্যে ১৫০ ছাত্রীই নদীর পশ্চিম পাড়ের শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসে। নির্মাণাধীন সেতুস্থলে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর মেয়েরা মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার দুর্ভোগ দেখে স্থানীয়দের সহায়তায় বাঁধ ও সুপারিগাছ দিয়ে সাঁকো বানানো হয়েছে। তবে বর্তমানে জোয়ারের সময় পানি বাড়লেই সাঁকো ডুবে যাচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আজাদ ইন্টারপ্রাইজের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, বর্তমানে জোয়ারের সময় পানি বাড়ছে এবং ওই খালে প্রবল স্রোত থাকায় সেতু নির্মাণকাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে পানি কমলেই দ্রুত সেতু নির্মাণকাজ শুরু করা হবে। এলজিইডির দুমকি উপজেলা প্রকৌশলী মো. আজিজুর রহমান বলেন, জোয়ারের সময় পানির উচ্চতা বাড়ছে। এ ছাড়া মুরাদিয়া শাখা নদীতে পানির প্রবল স্রোত থাকায় সেতুর সেন্টারিংয়ের কাজ করা যাচ্ছে না। পানি কমলেই সেতুর কাজ শুরু করা হবে এবং দ্রুতই সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।