ভরণপোষণ চাওয়ায় বাবার হাত ভেঙে দিল ছেলে

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৬:৪৪, মে ১০ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নে ছেলের কাছে ভরণপোষণ চাওয়ায় বৃদ্ধ সেকান্দার আলী সিকদারের (৮৪) দুই হাত ভেঙে দিয়েছে তার ছেলে সবুজ সিকদার। রোববার (০৯ মে) দুপুরে খবর পেয়ে নাতনি (বড় ছেলের মেয়ে) তাকে উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। শনিবার সেকান্দার আলীকে বেধড়ক মারধর করে ঘরে আটকে রাখেন তার সেজ ছেলে। পরে নাতনি এসে তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ওই বৃদ্ধ তার ছেলের বিচার চেয়ে বাউফল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেকান্দার আলী সিকদার জানান, তার চার ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে সিদ্দিক সিকদার ঢাকায় থাকেন। মেজ ছেলে মিজান ও সেজ ছেলে সবুজ বাড়িতে থাকেন। ছোট ছেলে ফিরোজ সিকদার তার শ্বশুর বাড়ির কাছে আলাদা বাড়ি করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকেন। মেয়ে তাজমহলকে বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগেই। বর্তমানে তিনি তার স্ত্রী ময়না বেগমকে নিয়ে নিজ ঘরে অনাহারে অর্ধাহারে জীবন যাপন করছেন। খুদার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তার স্ত্রী ময়না তার মেয়ে তাজমহলের কাছে চলে গিয়েছেন। সেকান্দার আলী মানুষের কাছে হাত পেতে চললেও করোনার কারণে তিনি অসহায় অবস্থায় পড়েছেন। শনিবার দুপুরের দিকে সেকান্দার আলী সিকদারের সেজ ছেলে সবুজ বাড়ির বাঁশ কাটছিলেন। সেকান্দার আলী বাঁশ কাটার কারণ জানতে চান। এ সময় ছেলের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। তিনি ছেলেকে তার সম্পদ ভোগ করতে হলে তাকে এবং তার স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বলেন। এতে সেজ ছেলে সবুজ ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে তার হাতে থাকা বাঁশ কাটা দায়ের উল্টো দিক দিয়ে সেকান্দার আলীকে বেধড়ক পিটিয়ে ঘরে আটকে রাখেন। রোববার দুপুরে খবর পেয়ে বড় ছেলে সিদ্দিকুর রহমান সিকদারের মেয়ে মরিয়ম বেগম বাড়িতে গিয়ে তার দাদাকে উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আখতারউজ্জামান বলেন, বৃদ্ধের হাত এক্সরে করে দেখা গেছে, তার বাম হাতের মধ্য অংশ ও ডান হাতের বুড়ো আঙুল সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। মরিয়ম বেগম জানান, তার দুই চাচা বাড়িতে থাকেন। তারাই দাদার সম্পদ ভোগ করেন। অথচ দাদা ও দাদিকে ভরণপোষণ দিতে চান না। ভরণপোষণ চাইলে মারধর করেন। এর আগেও কয়েক বার তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে তিনি মানুষের দুয়ারে হাত পেতে চলেন। রাতে মসজিদে কিংবা কোনো দোকান ঘরের সামনের বেঞ্চে ঘুমান। বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপরাধীকে গ্রেপ্তারের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।