সাবেক স্ত্রী’র ভুয়া মামলায় কুপোকাত স্বামী

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:৩১, মার্চ ০২ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সাবেক স্ত্রী সানজিদার হয়রানিমুলক মামলাসহ গুম ও খুনের অব্যাহত নজড়দাড়িতে দিশেহারা নগরীর লাইনরোডস্থ বাসিন্দা স্বামী সাজ্জাদ মালতিয়া। স্ত্রী’র সাবেক প্রেমিকের সাথে পরকীয়ার জের ও স্ত্রী’র ভগ্নিপতির কাছে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটনো হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় সাবেক স্ত্রী সানজিদার হুমকি-দামকি সহ একের পর এক মানসিক নির্যাতন। হয়রানি করতে দেওয়া হয়েছে পরপর তিনটি মিথ্যা মামলা। শুধু তাই নয়, স্ত্রী’র বড় ভাই শাওন কর্তৃক প্রতিনিয়ত গুম ও খুনের চেষ্টাও অব্যাহত থাকায় দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে সাবেক স্বামী ভুক্তভোগী সাজ্জাদ। ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, সাবেক স্ত্রী সানজিদার ভাই শাওন তার বাহিনী নিয়ে সাজ্জাদকে নিয়মিত গুম ও খুনের হুমিক দিয়ে আসছে স্ব-শরীরে। আর এ প্রক্রিয়ায় শাওন তার বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে সাজ্জাদের গতিবিধিও নজড়দারি করছে প্রতিনিয়ত। এনিয়ে কোতয়ালি থানায় গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে এবং পরবর্তীতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দুটি সাধারণ ডায়েরীও করা হয়। সূত্র মতে, কাউনিয়া কালাখার বাড়ির জলিল ম্যানসনের ভাড়াটিয়া আয়নাল হাওলাদারের দ্বিতীয় পক্ষের কন্যা সানজিদা আকতারের সাথে ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় সাজ্জাদ। একটি পুত্র সন্তানও আসে তাদের সংসারে। স্ত্রী সানজিদাকে নিয়ে শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সাথে জলিল ম্যানসনের একই বাড়িতে বসবাস করতেন তারা। তবে সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বসবাস করতেন। তাদের সাথে স্ত্রী সানজিদার বড় বোন নিপা বেগম ও তার স্বামী সুমন হাওলাদার দ্বিতীয় তলার ওই একই ফ্ল্যাটে শেয়ার করে থাকতেন। একত্রে থাকার কারনে ভায়রা সুমন হাওলাদারকে নগদ ২ লাখ টাকা ধার দেন সাজ্জাদ। এদিকে ভুক্তভোগী সাজ্জাদ ধীরে ধীরে তার স্ত্রী সানজিদার পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পারে। গত বছর ফেব্র“য়ারি মাসে স্ত্রী সানিজদাকে পরকীয়ার ব্যাপারে বাধা প্রদান করলে পরিবারের সবাই মিলে সাজ্জাদকে মারধর করে। এনিয়ে পারিবারিকভাবে বারংবার শালিস মিমাংসা হলেও কোন সুরাহা মেলেনি। একপর্যায়ে সানজিদা তার পরিবারকে সরাসরি জানিয়ে দেয় যে সাজ্জাদের সাথে সংসার করবেনা। স্ত্রী’র এমন সিদ্ধান্ত জানার পর ভায়রা সুমনকে দেয়া দু’লাখ টাকা ফেরত চায়। এতে স্ত্রী’র পরিবারের লোকজন সাজ্জাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। একপর্যায়ে সাজ্জাদকে মারধর করে সকল সাংসারিক জিনিসপত্র রেখে উক্ত বাসা থেকে বের করে দেয়। সর্বশেষ সাজ্জাদ প্রাণে বাঁচতে স্ত্রী সানজিদাকে গত বছর আগস্ট মাসের ২৭ তারিখ তালকা দেয়। তালাক দেয়ার পরই স্ত্রী সানজিদা তার বিরুদ্ধে তিনটি হয়রানিমুলক মামলা দায়ের করে। এরমধ্যে দুটি মামলা নারী ও শিশু আদালতে এবং একটি চেক প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়। এরমধ্যে নারী ও শিশু আদালতের মামলা দুটিতে জামিনে থাকলেও অপর চেক প্রতারনার মামলাটি আগামী রবিবার আদালতে হাজিরার দিন ধার্য্য রয়েছে। এদিকে ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, স্ত্রী’র পরকীয়ার ব্যাপারে বাধা প্রদানের কারনে গত বছর ফেব্র“য়ারি মাসে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেয়। এরপর তাকে আর ওই বাড়িতে যেতে দেওয়া হয়নি। এমনকি একমাত্র সন্তানের সাথেও দেখা করতে দেয়নি। আর এ সুযোগে উক্ত বাসায় রেখে আসা সাজ্জাদের চেক দিয়ে স্বাক্ষর জাল করে একটি চেক প্রতারণা মামলা করেন। আর এই চেকের বিপরীতে কোতয়ালি থানায় গত বছর আগস্ট মাসে একটি সাধারণ ডায়েরীও করেন সাজ্জাদ। পরে ওই চেকের ব্যাপারে হিসাবকারীর স্বাক্ষরের ভিন্নতা রয়েছে উল্লেখ করে একটি প্রমাণপত্র দেয় ইসলামি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী স্বামী সাজ্জাদ বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে যে চেক প্রতারণার মামলা দিয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কারণ চেক প্রতারনা মামলা দেয়ার আগেই তারা আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলা দিয়েছে। তাহলে আমার প্রশ্ন হলো আসামীকে কি কেউ টাকা ধার দেয়? আর উক্ত চেক প্রতারণা মামলার বাদি সানজিদার মা হাসি বেগম। তাহলে কোন শ্বাশুড়ি তার তালাক দেয়া মেয়ে জামাইকে টাকা ধার দেয়? তাও এত মোটা অংকের টাকা। যেখানে তাদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। শুধু তাই নয়, সাবেক স্বামী সাজ্জাদকে হয়রানি করার জন্য কাউনিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী সানজিদা। ডায়েরীতে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। অথচ এই সাধারণ ডায়েরীর বিপরীতে চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি মাসের ২২ তারিখ তদন্তে গিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা স্থানীয় স্বাক্ষীগণের ভিত্তিতে কোন সত্যতা পায়নি মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। উল্লেখ্য, সাবেক স্ত্রী সানজিদার ভগ্নিপতি সুমন হাওলাদারকে দু’লাখ টাকা ধার দেয় সানজিদার সাথে সাংসারিক সম্পর্ক থাকাকালীন সময়ে। তবে তালেকের পর ভায়রা সুমনকে দেয়া দু’লাখ টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন সময় টালবাহানা করতে থাকে। পরে ভুক্তভোগী সাজ্জাদ উক্ত টাকা উঠানোর জন্য গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের ২৭ তারিখ একটি চেক প্রতারণা মামলা দায়ের করে। আর এতে সাবেক স্ত্রী’র পরিবারের লোকজন সাজ্জাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং মামলা তুলে নিতে হুমকি দিতে থাকে। পরে একের পর এক মিথ্যা মামলা ও প্রাণনাশের কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে সানজিদার পরিবার। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী স্বামী সাজ্জাদ আরো বলেন, সানজিদার ভাই শাওন নুতন বাজার এলাকায় একটি গ্যাং চক্রের হোতা। প্রতিনিয়ত আমার দোকানে আসে এবং গতিবিধি অনুসরণ করে। শুধু তাই নয়, তার বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন সময়ে হত্যা ও গুমের হুমকি দিয়ে আসছে। এহেন পরিস্থিতিতে সাজ্জাদ একটি দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। অপরদিকে এহেন কর্মকান্ডের ব্যাপারে সাজ্জাদের সাবেক স্ত্রী সানজিদার ০১৭৪৫-৫৩৯২.. নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে বলেন, আদালতে মামলা চলছে এনিয়ে কিছু বলতে চাইনা।