প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেয়া ঘর ভাঙচুর: কারাগারে আ. লীগ নেতাসহ ৫ জন

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২১:৩১, মার্চ ০১ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় মুজিববর্ষে গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেয়া ১১টি ঘরের ৩৫টি পিলার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় মামলাও হয়। মামলায় গ্রেফতার চাখার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) দিপু দত্তসহ (৪৭) পাঁচজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (১ মার্চ) বিকেলে বানারীপাড়া থানা পুলিশ তাদের বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে। এসময় আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক শারমিন সুলতানা সুমি তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। দিপু ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। দিপু দত্ত ছাড়াও কারাগারে পাঠানো অন্যরা হলেন-ঘর নির্মাণ প্রকল্পের লেবার সর্দার ইমরান সিকদার (২৭), রাজমিস্ত্রি রামপ্রসাদ মন্ডল (৩৩), নির্মাণ শ্রমিক সাদিক শেখ (৩২) ও মিশকাত মোল্লা (২৭)।   মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজনও মানুষ গৃহহীন থাকবে না, প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বানারীপাড়া উপজেলায় মোট ২০০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৬৫টি ঘর নির্মাণ হচ্ছে উপজেলার চাখার ইউনিয়নের সাকরাল এলাকায়। গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে ইমদাদুল ইসলাম নামের প্রকল্পে কর্মরত এক নির্মাণ শ্রমিককে মারধর করেন সুমন কাজী নামের স্থানীয় এক যুবক। এ নিয়ে প্রকল্প এলাকায় হট্টগোল হয়। এরপর মধ্যরাতে নির্মাণাধীন ১১টি ঘরের ৩৫টি পিলার ভেঙে ফেলা হয়। এ ঘটনায় পরদিন ইউনিয়ন তহশিলদার বাদশা মিয়া বাদী হয়ে সুমন কাজীসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।   এ বিষয়ে বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, রাতের আঁধারে ঘরের পিলারগুলো ভেঙে ফেলা হয়। পরদিন ইউপি মেম্বার দিপু দত্তসহ প্রকল্পের শ্রমিকরা স্থানীয় সুমন কাজীকে এর জন্য দায়ী করেন। এছাড়া রাতের ওই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তারা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। এতে সন্দেহের সৃষ্টি হলে পুলিশ স্থানীয় বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলে। একপর্যায়ে জানা যায়, প্রকল্পে কর্মরত নির্মাণশ্রমিক ইমদাদুল ইসলামের সঙ্গে স্থানীয় এক প্রবাসীর স্ত্রীর সম্পর্ক চলে আসছিল। ঘটনার দিন রাতে গোপনে ইমদাদুল ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এসময় দেখে ফেলেন সুমন কাজীসহ আরও কয়েকজন যুবক। এরপর ইমদাদুলকে তারা মারধর করেন। এর জের ধরে সুমন কাজীর সঙ্গে দিপু দত্তসহ নির্মাণ শ্রমিকদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। তিনি আরও জানান, সুমন কাজীকে ফাঁসাতে দিপু দত্তসহ নির্মাণ শ্রমিকরা ওই রাতেই প্রকল্পের ১১টি ঘরের ৩৫টি পিলার ভাঙচুর করেন। পরে এ ঘটনার দায় চাপানোর চেষ্টা করেন সুমন কাজীর ওপর। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় রোববার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে দিপু দত্তসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশের কাছে ঘরের পিলার ভাঙচুরের কথা স্বীকার করেন। আজ বিকেলে ঘর ভাঙচুর মামলায় ওই পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।