গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় চিকিৎসকসহ ৩ জনের নামে মামলা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:০৫, ফেব্রুয়ারি ২৭ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ গৃহকর্মী নিপা বাড়ৈকে (১১) নির্যাতনের ঘটনায় জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালের অর্থোপেডিক ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ ডা. সিএইএস রবিনসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াই টার দিকে নিপার চাচা তপন বাড়ৈ বাদী হয়ে বরিশালের উজিরপুর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন। মামলায় চিকিৎসক রবিন ও স্ত্রী রাখি দাস, গাড়ি চালক বাসুদেব হালদারকে আসামি করা হয়েছে। চিকিৎসক রবিনের গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গজালিয়া এলাকায়। তবে জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালে চাকরির সুবাদে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় বসবাস করছেন। অন্যদিকে নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী নিপা বাড়ৈ উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকার ননী বাড়ৈর মেয়ে। তার বাবা একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। তার মা দুইবছর আগে অন্যত্র বিয়ে করেন। দুইবোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে নিপা মেঝ। অভাব অনটনের কারণে প্রায় সাতমাস আগে নিপাকে জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালের অর্থোপেডিক ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ ডা. সিএইএস রবিনের শ্যামলীর বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দেয়া হয়।   বাদী তপন বাড়ৈ মামলার আরজিতে উল্লেখ করেন, ‘সাতমাস আগে চিকিৎসক সিএইএস রবিনের বাসায় নিপাকে কাজে দেয়া হয়। তখন চিকিৎসক রবিন ও তার স্ত্রী রাখি দাস বলেছিলেন নিজ সন্তানের মতো নিপাকে দেখে রাখবেন। কিন্তু গত (২৪ ফেব্রুয়ারি) বুধবার সন্ধ্যায় অসুস্থ অবস্থায় নিপাকে চিকিৎসক রবিনের গাড়ি চালক বাসুদেব ঢাকা থেকে উজিরপুরের জামবাড়ি এলাকার একটি দোকানের সামনে ফেলে রেখে যায়। এরপর নিপা বাড়িতে এসে জানায়, কাজে সামান্য ভুল করলে তার ওপর চালানো হতো অমানবিক নির্যাতন। গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়া হতো। ঠিকমতো খাবার দেয়া হতো না। বাসার মধ্যে আটকে রেখে প্রতিদিনই তাকে মারধর করা হতো। গলা টিপে ধরা হতো। চিকিৎসকের স্ত্রী রাখি দাসের নির্যাতনে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। নির্যাতনের কারণে কয়েক দিন আগে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে কোন ওষুধও খেতে দেয়া হয়নি। শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হলে চিকিৎসক রবিনের গাড়ি চালক বাসুদেবকে দিয়ে তাকে উজিরপুরে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ নিপাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে চিকিৎসক রবিন ও তার স্ত্রী রাখি দাস উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অসুস্থ নিপাকে অন্যত্র নিয়ে যেতে প্রলোভন ও নানাভাবে চাপ দিতে থাকেন। ভয়ে তাকে অন্যত্র সরিয়ে রাখে নিপার পরিবার। উজিরপুর মডেল থানা ওসি (তদন্ত) মো. মাইনুল ইসলাম মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনা তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’