বরিশাল নগরীর সরকারি দপ্তরে তথ্য পেতে সাধারণ মানুষকে নানা ভোগান্তি

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:০১, ফেব্রুয়ারি ১৮ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥  জনগণকে ক্ষমতায়িত করতে তথ্য অধিকার আইন করা হলেও বরিশাল নগরীর বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে তথ্য পেতে সাধারণ মানুষকে নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তথ্য দিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কর্মকর্তারা গড়িমসি করেন। তথ্য অধিকার আইনে তথ্য পেতে গণমাধ্যমকর্মী ও নাগরিক সমাজের মাঝে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা কাজ করছে এ নগরীতে। অনেককে উল্টো হয়রানির শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত ও আপডেট তথ্য না পাওয়ার কারণে অনেকেই ছুটে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। এ সব দপ্তর থেকে তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত গরিব বা স্বল্প শিক্ষিত ব্যক্তিদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাদেরকে পাত্তাই দেন না কর্মকর্তারা। মাঝে মধ্যে কর্মকর্তারা তথ্য প্রাপ্তির আবেদনের সরকারি একটি ফরম হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এটা দিয়ে আবেদন করেন। সময় হলে তথ্য পাবেন।’ এভাবে আবেদন করেও সহজে তথ্য মেলে না। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তথ্য পেতে সাংবাদিকরাও বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ব্যস্ততার কথা বলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কালক্ষেপণ আর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন কর্মকর্তারা। শেষ পর্যন্ত সেই তথ্য আর পাওয়া যায় না। সরেজমিনে নগরীর কয়েকটি দপ্তর ঘুরেও এ সংক্রান্ত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। জানা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তরে প্রায় দুই মাস আগে তথ্য প্রাপ্তির ‘ক’ ফরমে আবেদন করেন একজন সংবাদকর্মী। কিন্তু ওই দপ্তরের কর্মকর্তারা কোন তথ্য না দিয়ে কালক্ষেপণ করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে জানতে বরিশাল সদর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জীব সন্নামত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে তার অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। সরকারি দপ্তরে তথ্য চেয়ে ভোগান্তিতে পড়া বেশ কয়েকজন সাংবাদিক অভিযোগ করে বলেন, তথ্য অধিকার আইনে তথ্য পেতে আমাদেরকে উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয়। সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা তথ্য দিতে চান না। আবার কেউ তথ্য অধিকার ফরমে আবেদন করলে তাকে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে তদ্বির করানো শুরু করেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা। এমনকি আবেদন তুলে নেয়ার জন্যও চাপ প্রয়োগ করা হয়। এতে কাজ না হলে আবেদনকারীকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়। তারা আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। তথ্য অধিকার আইনে যা আছে : নির্ধারিত ফরমে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর তথ্য চেয়ে আবেদন করতে হবে। একটিমাত্র তথ্য প্রদানকারী ইউনিট হলে অনধিক ২০ কার্যদিবস এবং একাধিক ইউনিট জড়িত থাকলে অনধিক ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য দিতে হবে। ব্যক্তির জীবন, মৃত্যু, গ্রেপ্তার বা কারাগার থেকে মুক্তি-সম্পর্কিত হলে অনুরোধ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তথ্য সরবরাহ করবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তথ্য দেওয়া সম্ভব না হলে তা ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আবেদনকারীকে জানিয়ে দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে তথ্য না পেলে বা সন্তুষ্ট না হলে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করেও তথ্য না পেলে নির্ধারিত সময়সীমার পর পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রধান তথ্য কমিশনার বরাবর অভিযোগ জানাতে হবে।