শুঁটকি পল্লীতে মন্দার হাওয়া

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:০২, ফেব্রুয়ারি ১৬ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরগুনার তালতলী ও পাথরঘাটার বিভিন্ন চরে গত তিন মাস ধরে শুরু হয়েছে শুঁটকি তৈরির কাজ। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে এবারের শুঁটকি ব্যবসা। কেউ কেউ লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ব্যবসা ফেলে বাড়িতে চলে গেছেন। জানা যায়, জেলার লালদিয়া, আশারচর, সোনাকাটা, জয়ালভাঙ্গা চরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৬ হাজার নারী-পুরুষ শুঁটকি তৈরির জন্য আসেন। প্রায় ২০০ শুঁটকি পল্লীতে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ৫ মাস ধরে চলে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ। এই শুঁটকি চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, খুলনা ও জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়।   করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আগে শুঁটকি বিক্রির যে হার ছিল কারোনাকালে সেই হার কয়েকগুণ কমেছে। শুঁটকি ব্যবসায়ীদের দাবি, করোনার আগে যেসব শুঁটকি ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেসব শুঁটকি পরে বিক্রি হয়েছে ২-৩শ টাকায়। করোনাকালীন এবং বর্তমানে বেশির ভাগ শুঁটকি কোল্ড স্টোরেজে না রাখার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সরেজমিনে ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের কারণে বিক্রি হচ্ছে না শুঁটকি। শুঁটকির মৌসুমও শেষের পথে। ফলে ক্রেতারাও এখন শুঁটকি কিনছেন না। তাই ব্যবসা অনেকটা মন্দা। মন্দা কাটিয়ে উঠতে আগামী মৌসুমের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আশারচরে ২১টি মালিকানার শুঁটকি ব্যবসায়ী রয়েছেন। প্রতিটি মালিকের আওতায় ১৫-২০ জন শুঁটকি শ্রমিক কাজ করেন। প্রতিজন শ্রমিককে এই চার মাসে ৭০-৮০ হাজার টাকা বেতন দিতে হবে। সব মিলিয়ে এবছর এই পল্লীতে প্রতিটি শুঁটকি ব্যবসায়ীকে লোকসান গুণতে হবে কয়েক লাখ টাকা। আর্থিক প্রণোদনা না পেলে তাদের বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন শুঁটকি ব্যবসায়ীসহ আড়ৎদাররা। শুঁটকি ব্যবসায়ী ফজলুল হক হাওলাদার বলেন, আমি এই এলাকায় শুঁটকি ব্যবসার সঙ্গে প্রায় ৩০ বছর ধরে জড়িত। কিন্তু এবছর শুঁটকির চাহিদা না থাকায় কয়েকগুন লোকসান গুণতে হবে। যা বিগত অন্য কোনো বছরে হয়নি। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে প্রায় তিন থেকে চার বছর লাগবে।   তিনি আরও বলেন, আমার ১২ জন শ্রমিক আছে। তাদের ৪ মাসে প্রতিজনকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বেতন দিতে হবে। এই বেতনের টাকা ও খরচাপাতি করে আমার প্রায় ৫ লাখ টাকা ক্ষতি হবে।   জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত শুঁটকি ব্যবসায়ীদের খোঁজখবর নিয়ে সরকারিভাবে তাদের প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা করব। সকল ব্যবসায়ীদের সরকারিভাবে ঋণ দেয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে।