‘দেয়াল ভেঙ্গে পড়ার সময় বাইরে ছিলাম, নাহলে সরকারের উপহার দেয়া ঘরেই আমার প্রাণ যেত’

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:০৪, ফেব্রুয়ারি ০৮ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ভূমিহীনদের মাঝে দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ প্রকল্পে বরগুনার তালতলী উপজেলায় বিভিন্ন অনিয়মের দেখা গেছে। ভূমিহীনদের নামে দুই শতাংশ খাসজমি বরাদ্দ থেকে শুরু করে ঘর নির্মাণকাজের প্রতিটি ধাপে অনিয়ম, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার ও নির্মাণের কয়েক ঘণ্টা পর ঘর ভেঙ্গে পড়াসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে সরকারের এই উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়া উর্মিলা রানী বলেন, ’ঘর নির্মাণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমার ঘর ভেঙ্গে পড়েছে। দেয়াল ভেঙ্গে পড়ার সময় বাইরে ছিলাম, নাহলে সরকারের উপহার দেয়া ঘরেই আমার প্রাণ যেত।’ তিনি আরো বলেন, ‘মালামাল পরিবহনের জন্য আমার কাছ থেকে ৯ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে।’ তালতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ-২-এর আওতায় উপজেলায় ১০০টি ভূমিহীন পরিবারকে দুই শতাংশ খাসজমি বন্দোবস্ত দিয়ে একটি সেমি পাকা গৃহনির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। যার প্রতিটি গৃহনির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। এই প্রকল্পের অধীনে তালতলী উপজেলায় প্রায় এক কোটি ৭১ লাখ টাকার কাজের দেখভাল করছেন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ইউএনও। এ উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়নে ১০০টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলার বেহেলা পশ্চিম ঝাড়াখালি গ্রামের অনেকেই জানিয়েছেন, ‘আমাদের গ্রামে ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণে নিম্নমানের ইট, নিম্নমানের বালু, কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নির্মাণ ব্যয়ের জন্য টাকা পয়সা নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। ’ পাশের গ্রামের বাসিন্দা মনোয়ারার ছেলে মনির হোসেন বলেন, ‘ভালোভাবে ঘর নির্মাণ করবে বলে ঠিকাদার বেল্লাল আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চান। যদি না দেই তাহলে জানিয়েছেন তাদের ইচ্ছামতো কাজ করবে। এ ছাড়া নিম্নমানের কাজ দেখে প্রতিবাদ করায় ঠিকাদার হুমকি-ধামকি দিয়েছেন।’ হরিণবাড়িয়া ব্রিজ সংলগ্ন মো: সোহাগ বলেন, ‘ঠিকাদার বেল্লাল আমার কাছে পাঁচ বস্তা সিমেন্ট ও ঘর নির্মাণের কাঠের আড়া চান। পাঁচ বস্তা সিমেন্ট আর কাঠ কিনতে আমার ১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে যাবে।’ তবে এ ব্যাপারে ঠিকাদার বেল্লাল অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কারো কাছে কোনো টাকা চাইনি, কেউ আমাকে টাকা দেয়নি।’ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রুনু বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারবো না আপনারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলেন। ঘর নির্মাণের তদারকি ইউএনও স্যার করেছেন।’ এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, বেল্লাল ঠিকাদার বা তার শ্রমিক যদি এ ধরনের কাজ করে থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।