রাজধানীতে ভেজাল মদ তৈরির কারখানার সন্ধান, গ্রেফতার ৬

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২১:৪৭, ফেব্রুয়ারি ০২ ২০২১ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ভেজাল মদপানে মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। এ সময় ভেজাল মদ তৈরির কারখানার সন্ধানসহ বিপুল পরিমাণ ভেজাল মদ ও মদ তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- মনতোষ চন্দ্র অধিকারী ওরফে আকাশ (৩৫), রেদুয়ান উল্লাহ (৩৫), সাগর বেপারী (২৭), নাসির আহমেদ ওরফে রুহুল (৪৮), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) ও সৈয়দ আল আমিন (৩০)। গত সোমবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও ও ভাটারা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে গুলশান ডিবি পুলিশের একটি দল। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন মদপান করার পর অসুস্থ হয়ে ভাটারা থানা এলাকায় তিন জন, ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় একজন ও মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় দুইজনসহ মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়। যা রাজধানীসহ দেশব্যাপী আলোড়ন তৈরি করে। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা রুজু হয়। উক্ত মামলাগুলো থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। তদন্তে ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় মদপানে মৃত্যুর ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দুই জন ব্যক্তি মোটরসাইকেল যোগে এসে এক বোতল মদ ভিকটিমকে দিয়ে চলে যায়। যা সেবন করে ভিকটিমের মৃত্যু হয়। পরবর্তী সময়ে ওই দুই ব্যক্তিকে শনাক্ত করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর গত সোমবার রাত ৯টার দিকে তেজগাঁওয়ের ইয়ানতুন চাইনিজ রেস্টুরেন্টের সামনে হতে মনতোষ, রেদুয়ান ও সাগরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভাটারা থানার খিলবাড়িরটেক এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ভেজাল মদ তৈরির কারখানার সন্ধানসহ কারখানার মালিক নাসির, ম্যানেজার আল আমিন ও কারিগর জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ভেজাল মদের কারখানা থেকে নকল বিদেশি মদ, মদের খালি বোতল, মদের বোতলের মুখ আটকানো কর্ক, স্টিকার, স্পিরিট, কৃত্রিম রঙসহ বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই চক্রের মূলহোতা নাসির ভেজাল মদ তৈরি করে বিক্রি করতেন। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়্যারহাউজগুলো থেকে মদ ক্রয়-বিক্রয়ে কড়াকড়ি থাকায় বাজারে মদের সঙ্কট তৈরি হয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা ভেজাল মদ তৈরির কারখানা গড়ে তুলে। তারা ভেজাল মদ তৈরির উপকরণ স্পিরিট, স্টিকার ও রঙ মিটফোর্ট হাসপাতালের আশপাশ এলাকা থেকে সংগ্রহ করতেন। এরপর সেগুলো দিয়ে চিনি পোড়ানো কালার ব্যবহার করে ভেজাল মদ তৈরি করতেন। তৈরি করা ভেজাল মদ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের দিয়ে বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতেন তারা। তাদের মাধ্যমে ভেজাল মদ চলে যেত সেবনকারীদের কাছে। মোহাম্মদপুর ও ভাটারা থানা এলাকায় মদপানে যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে সেগুলোও গ্রেফতারদের কারখানাতেই তৈরি করা ভেজাল মদ বলে গোয়েন্দা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এ ঘটনায় গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।