২২ দিন পর ইলিশ আহরণে ব্যস্ত জেলেরা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৬:৪২, নভেম্বর ০৫ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ইলিশ আহরণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে নদীতে আবারও মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন ভোলার জেলেরা। এরই মধ্যে কোনো কোনো জেলে আবার মাছ ধরে ঘাটেও ফিরছেন, কেউবা আবার নদীতে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) ভোর থেকেই জাল, নৌকা ও ট্রলারসহ মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে নতুন উদ্যোমে ইলিশ ধরার উৎসবে মেতে উঠেছেন জেলেরা। এদের অনেকেই আবার বুধবার (০৪ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকেও মাছ ধরার কাজে যোগ দেন। এদিকে, নিষেধাজ্ঞা শেষে পুনরায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে জেলেদের মুখে হাঁসি ফুটেছে। জেলেদের হাকডাকে মুখরিত হয়ে উঠেছে মাছের আড়তগুলো। তবে প্রথম দিন সেভাবে ইলিশ জালে ধরা পড়ছে না বলে জানিয়েছেন জেলেরা। তবুও ইলিশ পাওয়ার অপেক্ষায় জাল ট্রলার নিয়ে ছুটছেন তারা। জেলেরা  জানান, ইলিশ আহরণের প্রথম দিনে জেলেদের জালে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ার ধারণা করা হলেও, কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এতে কিছুটা চিন্তিত জেলেরা। তবে দু'একদিনের মধ্যে নদীতে ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশা তাদের। আর নদী থেকে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়লেই সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন ইলিশের সঙ্গে সম্পৃক্ত জেলেরা। এ বিষয়ে তুলাতলী এলাকার হারুণ মাঝি  বলেন, মধ্যরাতে মেঘনার মদনপুর পয়েন্টে ইলিশ ধরতে গেছি, সকাল পর্যন্ত ১০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করছি। বশির মাঝি জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন পর প্রথম দিনে মাছ ধরতে গিয়ে ছয় হাজার টাকার মাছ পেয়েছেন। বিগত সময় নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম দিনে অনেক মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু এবার তেমন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তুলাতলী এলাকার কাসেম মাঝি জানান, প্রথম দিন তিনি নদীতে ইলিশ ধরতে যাননি। তবে তার ছেলে রহিম মাছ ধরতে গিয়ে তিন-চার হাজার টাকার মাছ পেয়েছেন। এখন মাছ তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বেশি ইলিশ ধরা পড়তে পারে। ইলিশা এলাকার জেলে জলিল মাঝি  বলেন, ২২ দিন কষ্টে কেটেছে, কিন্তু প্রথমদিন নদীতে নেমেই যেটুকু ইলিশ পেয়েছি, তাতে আমরা মোটামুটি খুশি। ইলিশা বিশ্বরোড এলাকার আড়তদার মো. সামসুদ্দিন  বলেন, নদীতে ইলিশ নেই বললেই চলে। প্রথম দিন আমাদের এ আড়তে মাত্র দুই লাখ টাকার মাছ কেনা-বেচা করেছি, গত বছর নিষেধাজ্ঞার পর প্রথমদিনে ১২ লাখ টাকার মাছ কেনা-বেচা হয়েছিল। এর আগে, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ১৪ অক্টোবর থেকে ০৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ নিষিদ্ধ করে মৎস্য বিভাগ। গত ২২ দিনে এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরার দায়ে ভোলায় ৬০৬ জেলেকে জেল-জরিমানা দেওয়া হয়। ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজহারুল ইসলাম  বলেন, আমাদের অভিযান সফল হয়েছে এবং মাছ নিরাপদে ডিম ছাড়তে পেরেছে। এবছর আমাদের এক লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করছি, ইলিশের লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে। নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথমদিনে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পড়লেও আগামী কয়েকদিনে মাছ ধরা পড়বে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।