চার মাসেও উদ্ধার হয়নি অপহৃত নববধূ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২২:৪০, নভেম্বর ০৩ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের এক নববধূকে অপহরণের ৪ মাস পরও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। বিয়ের ২৪ দিনের পর ওই নববধূ বাপের বাড়িতে আসলে সেখান থেকে একদল সন্ত্রাসী তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের তিন দিন পর নববধূর পিতা নূর হোসেন ফকির বাদী হয়ে থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলা তুলে নিতে নববধূর পরিবারকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সূত্রে মতে, চরমোনাই ইউনিয়নের রাজারচর গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের ফকির বাড়ির মোঃ নূর হোসেন ফকিরের মেয়ে দিপা আক্তার (১৯) কে গভীর রাতে অপহরন করে নিয়ে যায় একই গ্রামের মৃত জামাল হাওলাদারের ছেলে মো: সুজন হাওলাদার। চলতি বছরের গত ১১ জুলাই গভীর রাতে রাজারচর গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের হাওলাদার বাড়ির বখাটে মোঃ সুজন হাওলাদার (২০) ও তাঁর লোকজন অপহরণ করে নিয়ে যান বলে অভিযোগ করে ওই নববধূর পরিবার। এরপর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে। মামলার এজাহার ও ওই নববধূ দিপার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পাশের বাড়ির বখাটে মোঃ সুজন হাওলাদার দিপাকে উত্ত্যক্ত ও প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। এই বিষয়টি দিপা তার পরিবারের সদস্যদের জানায়। এতে আসামী সুজন হাওলাদার ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে সুজন হাওলাদারের হাত থেকে রক্ষা পেতে চলতি বছরের গত ১৭ জুলাই দিপা আক্তারকে পারিপারিকভাবে অন্যত্র বিয়ে দেয়া হয়। অন্যত্র বিয়ের খবর জানতে পেরে বখাটে সুজন হাওলাদার দিপাকে অপহরণ করার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এদিকে দিপা আক্তার বিয়ের প্রায় এক মাস পর নিজের পৈত্রিক বাড়িতে আসে। সুযোগের অপেক্ষায় থাকা বখাটে সুজন ওই দিন রাতেই তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দিপার বাড়িতে হামলা চালায়। পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে অন্যের বিবাহিত স্ত্রী দিপা আক্তারকে জোরপূর্বক অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে এই ঘটনায় দিপা আক্তারের পিতা বাদী হয়ে তিন দিন পরে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই নববধূর মা বলেন, বখাটে সুজনের উত্ত্যক্তের কথা প্রায়ই দিপা আমাকে বলত। পরে একদিন আমার এক আত্মীয় ওই বখাটেকে নিষেধও করেছিলেন। কিন্তু ওই বখাটে তাও বিরক্ত করতেন। মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যাবে, আমরা এটা বুঝতে পারেনি। অপহরণের পর থেকেই ওই বখাটের আত্মীয়স্বজনের কাছে কতই না অনুরোধ করেছি আমার মেয়েটাকে দিয়ে দিতে। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। আমার মেয়ে অন্যের স্ত্রী। প্রতিনিয়ত ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কথা শুনতে হচ্ছে। মেয়েটা এখন কী অবস্থায় আছে, সেটাও আমরা জানি না। পরে বাধ্য হয়ে থানার মামলা করেছি। কিন্তু পুলিশ এখনো আমার মেয়েটাকে উদ্ধার করতে পারেনি। আমি আমার মেয়েটাকেই চাই। বখাটের পরিবার এখন মামলা তুলে নিতে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না দিলে নাকি মেয়েকে কোনো দিনও দেবে না।’ এ ব্যাপারে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ ফোন ট্রাকিং করে চট্টগ্রামে তাদের অবস্থান শনাক্ত করেছিল। পরে তারা মোবাইল বন্ধ রাখার কারণে তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে দেরী হচ্ছে। তবে ওই মেয়েকে উদ্ধারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই মেয়েকে উদ্ধার করা যাবে। এ বিষয়ে জানতে মোঃ সুজন হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তারা সবাই পলাতক রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।