পরকীয়া দেখে ফেলায় সন্তানকে হত্যা, মাসহ তিনজনের যাবজ্জীবন

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:৪২, নভেম্বর ০১ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় পরকীয়া সম্পর্ক দেখে ফেলায় মো. রনি (১১) নামে এক শিশুকে হত্যার দায়ে তার মাসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১২ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে বরিশাল জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শহীদ আহম্মেদ এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নিহতের মা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজীরহাট থানার পশ্চিম রতনপুর এলাকার বাসিন্দা লতিকুল্লাহ দুয়ারীর স্ত্রী কনা বেগম ও তার প্রেমিক একই এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন নলী ও শাহিন নলী। রুহুল আমিন নলী ও শাহিন নলী সম্পর্কে দুই ভাই। রায় ঘোষণার সময় আদালতের কাঠগড়ায় কনা বেগম ও রুহুল আমিন নলী উপস্থিত থাকলেও শাহিন নলী অনুপস্থিত ছিলেন। নিহত রনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে লতিকুল্লাহ দুয়ারী ও কনা বেগম দম্পতির সন্তান। জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক রায়ের বরাত দিয়ে জানান, নিহত রনির বাবা চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডতে দিনমজুরের কাজ করতেন। মেহেন্দিগঞ্জের কাজীরহাট থানার পশ্চিম রতনপুরে তার গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী কনা বেগম ছেলে রনিকে নিয়ে থাকতেন। স্বামী চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে থাকায় প্রতিবেশী রুহুল আমিন নলী ও শাহিন নলীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে কনা বেগমের। ২০১৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে রনি মাঠে খেলাধুলা করে বাড়ি ফিরলে মা কনা বেগম ও রুহুল আমিন নলীকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে। রনি অন্যদের ঘটনাটি বলে দিতে পারে- এমন সন্দেহে মা কনা বেগম, রুহুল আমিন নলী ও শাহিন নলী শিশুটিকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর রনিকে সাপে কেটেছে বলে মরদেহ দাফন করতে গেলে স্থানীয় ইউপি সদস্যর ও অন্যদের সন্দেহ হয়। তারা বাধা দেন। খবর পেয়ে রনির বাবা চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থেকে এসে পরদিন হত্যা মামলা করেন। পরে কনা বেগম, রুহুল আমিন নলী ও শাহিন নলীকে পুলিশ গ্রেফতার করলে তারা রনিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এরপর ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেন। অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক জানান, ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের বিচারক তিন আসামিকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।