বরিশালের শেবাচিমে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৭:২৮, নভেম্বর ০১ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ এক হাজার শয্যার বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকে দেড় থেকে দুই হাজার। প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক চিকিৎসক পদ শূন্য থাকায় এই হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট প্রতিনিয়ত। সংকটের মধ্যে কিছুটা হলেও হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে আসছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তবে গত শনিবার দুপুর ২টা থেকে ইন্টার্ন ডক্টরস্ অ্যাসোসিয়েশনের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে চিকিৎসা সংকট চরম আকার ধারণ করেছে হাসপাতালটিতে। দ্বিতীয় দিনের মতো আজও চলছে কর্মবিরতি। ইন্টার্ন চিকিৎসদের কর্মবিরতির মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় দ্বিগুন রোগী মারা গেছেন এই হাসপাতালে। চিকিৎসা সংকটের কথা স্বীকার করে দ্রুত সংকট সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন। ৫০০ শয্যার শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ২০১০ সালে এক হাজার শয্যায় উন্নীত হলেও জনবল বাড়েনি আজ পর্যন্ত। উপরন্তু ৫০০ শয্যার জনবলেই রয়েছে ঘাটতি। হাসপাতালে গড়ে রোগী ভর্তি থাকছেন দেড় থেকে দুই হাজার। তাদের জন্য প্রায় ৫০০ চিকিৎসক প্রয়োজন হলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৯৫ জন। এর মধ্যে পরিচালকসহ পাঁচজন ডাক্তার প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। বাকি ৯০ জন ডাক্তার ৩ শিফটে সেবা দেন হাজারো রোগীর। এ কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ প্রতিনিয়ত। এর উপর গত শনিবার দুপুর ২টা থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করায় রোগীদের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। ২ দিনেও ডাক্তারের দেখা না পেয়ে ক্ষুব্ধ অনেক রোগী ও তাদের স্বজনরা। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আহমেদ শফি বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বলা হয় হাসপাতালের প্রাণ। তারাই রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। কিন্তু গত ২ দিন ধরে তারা কর্মবিরতি করায় রোগীদের চিকিৎসায় কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে যতটা সম্ভব তারা রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। বরিশাল শেবাচিম শাখা ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. সজল পান্ডে বলেন, রোগীদের কষ্ট দেওয়া বা তাদের জিম্মি করা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে নয়। তবে কাজের উপযুক্ত পরিবেশ প্রয়োজন। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ ৩ দফা দাবি মেনে নিলেই তারা কাজে ফেরার কথা বলেন। রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় এই হাসপাতালে ১৯ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ১০ জন রোগীর।