ফেঁসে যাচ্ছেন শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালকসহ পরিচালনা পর্ষদ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২১:৪১, অক্টোবর ২৬ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেঁসে যাচ্ছেন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন। অনিয়ম দূর্নীতির দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। শুধু পরিচালকই নয়, হাসপাতাল প্রশাসনের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা এ ব্যবস্থার আওতায় আসছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বশীল সুত্র। সম্প্রতি দেশের একাধিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ন বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম দূর্নীতির চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান অডিট অধিদপ্তর। প্রতিবেদনে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে শেবাচিম হাসপাতালে বিভিন্ন খাতে প্রায় ৮০ কোটি টাকার অনিয়ম দূর্নীতি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয় হাসপাতালের দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা কর্মকর্তা এ অনিয়ম দূর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত। অডিট অধিদপ্তরের এমন প্রতিবেদনের পর নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। প্রতিবেদন বিশ্লেষন ও আরো অধিকতর তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের হাসপাতাল শাখার অতিরিক্ত সচিব মোঃ মুহিবুর রহমান বলেন, অডিট অধিদপ্তরের ওই প্রতিবেদন আমরা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছি। প্রতিবেদন ছাড়াও মন্ত্রনালয় এ ব্ষিয়ে বিভিন্ন ভাবে খোঁজ খবর নিচ্ছে। যারা এ অনিয়ম দূর্নীতির সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন শুধু শেবাচিম হাসপাতাল নয়, প্রতিবেদনে দেশের বেশ কিছু হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান অডিট অধিদপ্তরের ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের অডিটে ১৭ টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বড় স্বাস্থ্য খাতের বড় ৪ টি দপ্তরে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির তথ্য উঠে আসে। যার মধ্যে অন্যতম শীর্ষ স্থান পায় শেবাচিম হাসপাতাল। রিপোর্টে বলা হয় এসব অনিয়ম দূর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তিদের কেউ কেউ সরাসরি জড়িত। আবার অনেকে পরোক্ষভাবে অনিয়ম-দুর্নীতিতে সায় দিয়েছেন। দায়ীদের চিহ্নিত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তাব্যক্তিদের চিঠি দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ অডিট অধিদপ্তর। শেবাচিম হাসপাতালের অনিয়ম দূর্নীতির রিপোর্টে বলা হয় আর্থিক ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে ক্রয়চুক্তি অনুমোদন করায় নিয়ম বর্হিভূত ভাবে ব্যয় করা হয় ৪ কোটি ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। আমদানির পক্ষে কোনো রেকর্ড-পত্রগ্রহণ না করা সত্ত্বেও ভারী যন্ত্রপাতি সরবরাহ বাবদ ঠিকাদারকে জালিয়াতির মাধ্যমে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। এমএসআর কেমিক্যাল রি-এজেন্ট বাজারমূল্য অপেক্ষা অতিরিক্ত দরে পরিশোধ করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি ১৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা। স্পেসিফিকেশন বহির্ভূত এমএসআর ওষুধ ও সার্জিক্যাল টেপ ক্রয়ে আর্থিক জালিয়াতি ১ কোটি ১৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। অতিরিক্ত দরে ব্রয়লার মুরগির মাংস ক্রয়ে আর্থিক ক্ষতি ৬০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ। পণ্য খাতে রোগী অপেক্ষা পাউরুটি, কলা ও ডিম সরবরাহ দেখিয়ে ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা আত্মসাৎ। বেড সংখ্যা অপেক্ষা অধিক রোগীর পথ্য দেখিয়ে ১ কোটি ৮২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা অতিরিক্ত পরিশোধ। এ ছাড়া অন্যান্য খাতে ৬৫ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৯৬ টাকার গুরুতর অনিয়ম হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।