মাথা গোজার ঠাঁই হারালেন হকার ফুল মিয়া

দেশ জনপদ ডেস্ক | ০১:১৬, অক্টোবর ২৬ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দারিদ্রতার নির্মম কষাঘাতে জর্জরিত অসহায় একটি পরিবার, যাদের মাথা গোজার আশ্রয়টুকুও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ভুমিহীন এই পরিবারটি যে ঘরটিতে বসবাস করত সেখান থেকে তাদের বের করে ঘরটি দখল করে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বৃদ্ধ ও অসুস্থ সংবাদপত্র বিক্রেতা ফুল মিয়ার কথা বলছি। মাথা গোজার শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে এখন স্ত্রী সন্তান নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন তিনি। সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের শুরুর দিকে পরিবার পরিজন নিয়ে একটু মাথা গোঁজার ঠাই পেয়েছিলেন সংবাদপত্র বিক্রেতা ফুল মিয়া। বরিশাল জেলা প্রশাসক ফুল মিয়াকে ১০ শতাংশ খাস জমি দিয়েছেন বসবাসের জন্য। কিন্তু এই জমিই যেন কাল হয়ে দাঁড়ায় ফুল মিয়ার জন্য। স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী ও মাদক সেবীদের নজরে পড়ে ফুল মিয়ার জমি। জমি ছাড়া করতে নানা হুমকি ভয়ভীতি, হামলা, মারধর এমনকি জেল পর্যন্ত খাটতে হয়েছে ফুল মিয়াকে। তারপরও নিজ ঘরে থাকা হলো না তার। প্রায় এক বছর ধরে ঘরে তালা মেরে রেখেছে ওই সন্ত্রাসীরা। থানা পুলিশ এমনকি জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেও কোন সুফল পাননি তিনি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোথায় যাবে হকার ভুমিহীন ফুল মিয়া ? তথ্য মতে, ২০১৯ সালে বরিশাল জেলা প্রশাসক কর্তক খাস জমি বরাদ্ধ পেয়ে রসুলপুরের কোস্ট গার্ড সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত ওই জমিতে একটি টিনের ঘর উঠিয়ে স্ত্রী ও ২ ছেলে মেয়েকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন ফুল মিয়া। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ওই জমির উপর নজর পড়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী রিপন, জয়নাল হাজারী, রুহুল, হালিমসহ বেশ কয়েক জনের। এদের মধ্যে রিপন একটি জাল দলিল তৈরী করে ফুল মিয়ার নামে বরাদ্ধ কৃত ওই জমি নিজের বলে দাবী করে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের উপেক্ষা করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে রিপন তার দলবল নিয়ে ফুল মিয়াকে ওই জমি থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করে। এক পর্যায়ে ফুল মিয়ার উপর হামলাও করে রিপন বাহিনী। রিপন বাহিনী ষড়যন্ত্র করে ভুয়া দলিল দেখিয়ে ও মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে গত ডিসেম্বরে জেলে পাঠান ফুল মিয়াকে। এ সুযোগে স্ত্রী সন্তানদের নামিয়ে ফুল মিয়ার ঘরে তালা মেরে দেয় রিপন ও তার দল বল। এত কিছুর পরেও খ্যান্ত হয়নি ওই সন্ত্রাসীরা। বিভিন্ন ভাবে অনবরত ফুল মিয়াকে ভয়ীতি ও জীবন নাসের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনার বিচার ও প্রতিকার চেয়ে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারী বরিশাল জেলা প্রশাসক ও চলতি মাসের ৫ তারিখ বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন ফুল মিয়া। কিন্তু কোন মহল থেকেই এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। ১৫ দিনের কারাভোগ শেষে ৫ জানুয়ারী থেকে এখন পর্যন্ত কখনো মসজিদ কখনো আবার কখনো অন্যের আশ্রয়ে রাত্রী যাপন করছেন ফুল মিয়া।