বিশ্ব পর্যটন দিবসে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে কুয়াকাটায়

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২২:০০, সেপ্টেম্বর ২৬ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বিশ্ব পর্যটন দিবসকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোন প্রকার আনন্দ শোভাযাত্রা বা র‌্যালী ছাড়াই শুধুমাত্র আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত হচ্ছে। এবারের বিশ্ব পর্যটন দিবসে “গ্রামীণ উন্নয়নে পর্যটন” শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন, ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক), কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এসোসিয়েশন (কুটুম) সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোচনার সভার আয়োজন করেছে। আবাসিক হোটেল মোটেলে আলোক সজ্জা, ব্যানার ফেস্টুন, মহাসড়কে তোরণ ও সৈকতে বেলুন উড়িয়ে দিবসটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। অপরদিকে “পরিচ্ছন্ন কুয়াকাটা পরিচ্ছন্ন আমরা” এমন সেøাগানে ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) এর উদ্যোগে সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে। করোনা মহামারির কারণে শুধুমাত্র আলোচনা সভা, ব্যানার ফেস্টুন, সৈকত পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও তোরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে এবারকার বিশ্ব পর্যটন দিবসের আয়োজন। এবিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে শোভাযাত্রা ও র‌্যালী না করে পর্যটন দিবস পালনের নির্দেশনা রয়েছে বলে কুয়াকাটা পর্যটন হলিডে হোমস এবং হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন জানিয়েছেন। বিশ্ব পর্যটন দিবসকে ঘিরে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে কুয়াকাটা সৈকতে হাজারো পর্যটকদের সমাগম ঘটেছে। শুধু পর্যটন দিবসেই নয়, পুরো পর্যটন মাস সেপ্টেম্বর জুড়েই পর্যটক রয়েছে কুয়াকাটায়-এমনটাই জানিয়েছেন হোটেল মোটেল ওনার্স এসোশিয়েশন। কুয়াকাটায় পর্যটক সমাগম বাড়াতে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের যুব পান্থ নিবাসসহ বেসরকারি আবাসিক হোটেল গুলোতেও ৩০-৫০ পার্সেন্ট ছাড়ে পর্যটকদের কাছে রুম ভাড়া দিচ্ছেন। এমন ছাড়ে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। কুয়াকাটা সৈকতে ছুটির দিন ছাড়াও প্রতিদিন শতশত পর্যটককের আগমনে মুখরিত সৈকত এলাকা। মুষলধারে বৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সমুদ্রে গোসল, দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখা, রাখাইনদের বৌদ্ধ বিহার দেখাসহ বার্মিচ আচার, রাখাইন পণ্য ও শুঁটকীর দোকানে ভিড় দেখা গেছে অনেক। বর্ষার উত্তাল ঢেউয়ে মাতোয়ারা পর্যটকরা। আবাসিক হোটেল কানসাই ইন’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, করোনা মহামারির পর সেপ্টেম্বর মাসে সব চেয়ে বেশি পর্যটক সমাগম হয়েছে কুয়াকাটায়। ধারাবাহিকভাবে প্রতিদিনই পর্যটকদের আগমন ঘটছে। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও পর্যটকদের কমতি নেই। ছুটির দিনে অনেক সময় রুমের সংকট দেখা দেয়। পর্যটন মৌসুম ছাড়া অ-মৌসুমে এতো পর্যটক আসবে এমনটা তারা কল্পনা করেনি। কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, পুরো পর্যটন মাস জুড়েই ট্যুর অপারেটরা সাশ্রয়ী মূল্যে ট্যুর প্যাকেজ পরিচালনা করেছেন। এতে ব্যাপক সাড়াও পেয়েছেন। “গ্রামীণ উন্নয়নে পর্যটন” এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে ট্যুর অপারেটররা কুয়াকাটায় পর্যটক আকৃষ্ট করতে কাজ করে যাচ্ছেন। পর্যটন করপোরেশনের পাশাপাশি ট্যুর অপারেটরস সংগঠন পর্যটন দিবসে আলোচনা সভা, বীচ ক্লিনিং এর উদ্যোগ নিয়েছে। কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারী নির্দেশনা মেনে পর্যটন দিবসে আলোচনা সভার পাশাপাশি কুয়াকাটাকে ব্র্যান্ডিং করতে মহাসড়কে তোরণ, প্রতিটি হোটেলে আলোকসজ্জা, ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব উদ্যোগে কুয়াকাটা সৈকতকে নিরাপদ ভ্রমণ স্পট হিসেবে পরিচিতি করতেও কাজ করছেন তারা। সৈকতে পর্যটকদের সমাগমের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ৩০-৫০ ভাগ মূল্য ছাড়ে রুম ভাড়া দিচ্ছেন বলে মোতালেব শরীফ দাবী করেন। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মোটেল যুব পান্থ নিবাসের ব্যবস্থাপক সুভাস নন্দী বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে ছোট্ট পরিসরে আলোচনা সভা ও ব্যানার ফেস্টুনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে এবারকার বিশ্ব পর্যটন দিবসের আয়োজন। তবে পর্যটন দিবসে যুব পান্থ নিবাসের আতিথেয়তা গ্রহণ করলে রুম ভাড়ার উপর ৫৪ পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট থাকছে। এদিকে পর্যটন দিবসে পর্যটকদের বাড়তি চাপকে মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরধার করা হয়েছে বলে ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়নের পাশাপাশি নজরদারী বাড়ানো হয়েছে।