জাল জন্ম নিবন্ধনে বাল্যবিবাহ দিতে গিয়ে বাবা-মায়ের জরিমানা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২২:৩৪, সেপ্টেম্বর ২২ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জাল জন্ম নিবন্ধন দিয়ে মেয়ের বাল্যবিবাহ দিতে গিয়ে জরিমানা গুণতে হয়েছে বাবা-মাকে। সেই সাথে ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ সম্পন্ন না করার জন্য কনেসহ বাবা-মাকে মুচলেকাও দিতে হয়েছে। গতকাল বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের দোয়ারিকা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, দোয়ারিকা গ্রামে মো. আ. ছত্তার হাওলাদার ও বেবা বেগম দম্পতি তাদের অপ্রাপ্ত বয়স্কা কন্যা মোসা. মুনিয়া আক্তার (১৬) এর বাল্যবিবাহ দেয়ার আয়োজন করেন। এ সংবাদ পেয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমীনুল ইসলাম পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত ঘটনাস্থলে যান। যেখানে গিয়ে দেখা যায়, অপ্রাপ্ত বয়স্কা মেয়ের বাল্যবিবাহ উপলক্ষে শত শত মেহমান উপস্থিত হয়েছেন সেখানে। ওই সময় ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিয়ের কনে মোসা. মুনিয়া আক্তারের জন্ম নিবন্ধন দেখতে চাইলে একটি জাল জন্ম নিবন্ধন প্রদর্শন করেন তার বাবাব মা। এ জন্ম নিবন্ধনটি অন-লাইনে যাচাই করলে তার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পরে কনের পিতা-মাতা স্বীকার করেন যে, তাদের অপ্রাপ্তবয়স্কা কন্যা মুনিয়া আক্তারকে বাল্যবিবাহ দেয়ার উদ্দেশ্যেই তারা এ জাল জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করেছেন। মোবাইল কোর্টে তারা স্বেচ্ছায় ও সজ্ঞানে বাল্যবিবাহ আয়োজনের জন্য কৃত অপরাধ স্বীকার করায় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ অনুযায়ী মো. আঃ ছত্তার হাওলাদার ও রেবা বেগমকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে বাল্যবিবাহের কনে মোসা. মুনিয়া আক্তার, তার পিতা মোঃ আঃ ছত্তার হাওলাদার ও মাতা রেবা বেগম এর নিকট হতে বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী মুচলেকা গ্রহণ করা হয়েছে। এ মুচলেকায় তারা অঙ্গীকার করেছেন যে, মোসা. মুনিয়া আক্তারের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার বিবাহ সম্পন্ন করবে না। পাশাপাশি ওইসময় সকল মেহমানকে আয়োজিত বাল্যবিবাহ সংশ্লিষ্ট স্থান ত্যাগ করার জন্য নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদেশ দিলে তারা সকলে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। মোবাইল কোর্ট চলাকালীন বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আকন, রহমতপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিতিতে বিবাহের প্যান্ডেল ও অন্যান্য স্থাপনা তাৎক্ষণিক অপসারণ করা হয়।